শশা চাষ ও পরিচর্যা…..
নিজস্ব প্রতিনিধি: একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল শশা। ভারতের সর্বত্র সবজি ও শশা দুইভাবেই খাওয়া হয়। পূর্ব ভারতে যেমন ফল হিসেবে খাওয়া হয়, তেমনই ভারতের অনেক জায়গায় সবজি হিসেবে শশা খাওয়া হয়। সারা পৃথিবীতেই শশার চাষ হচ্ছে। স্যালাডেও সাধারণত শশার ব্যবহার চোখে পড়ে। শশা স্বাস্থ্য উপযোগী ফল। শরীর ঠান্ডা রাখে, খিদে বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
শশায় কী কী খাদ্যগুণ থাকে– প্রোটিন থাকে ০.৪, স্বেতসার থাকে ২.৫ শতাংশ, চর্বি ০ শতাংশ, আঁশ ০.৮ শতাংশ, মিনারেল ৯৬ শতাংশ।
এছাড়াও আছে ভিটামিন -বি ও সি। বহুমুত্র রোগীদের পক্ষে শশা খুবই উপকারি। শশা প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই চাষ করা হয়। যতদূর জানা যায়, শশার উৎপত্তিস্থল ভারতবর্ষ। ভারতের হরিয়ানা ২৭৪.৪০ টন, মধ্যপ্রদেশ ১৫৪.৫২ টন, আসাম ৭১.৩০ টন, ওড়িশা ২৮.২৩ টন, ত্রিপুরা ১৮.১৯ টন শশা উৎপন্ন হয়। এছাড়া মেঘালয়, মিজোরামেও এর চাষ হয়। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র এই চাষ বিস্তার লাভ করে। ভারতের কোথাও এর নাম খিরা, কোথাও কাকড়ি প্রভৃতি।
আবহাওয়া: শশা গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালের ফসল। উষ্ণ জায়গায় ভালো ফলন হয়। ঠান্ডা জায়গায় বা তুষারপাত সহ্য করতে পারে না।
বোনার সময ও বীজের হার: পূর্ব ভারতে গ্রীষ্মকালীন শশার বীজ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস এবং বর্ষাকালীন ফসলের বীজ জুন-জুলাই মাসে বোনা হয়। মাটির উত্তাপ বাড়লে শশার অঙ্কুরোদগম ভালো হয়। পরেও ভালোভাবে স্টোর করতে পারলে শশার বীজ ৪-৫ বছর পরেও অঙ্কুরিত হয়।
আরও পড়ুন:রুদ্ধশ্বাস গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ, ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়ালো ২৩ লক্ষ
বীজের মাত্রা প্রতি হেক্টর জমিতে ২-৩ কেজি বীজ লাগানো যেতে পারে।
মাটি তৈরি- লম্বা ও আড়াআড়িভাবে ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে চাষ শুরু করা যেতে পারে। এরপর মাটি ঝুরঝুরে হলে বুঝবেন যে এখন শশা চাষ শুরু করা যেতে পারে।
সার প্রয়োগ- হেক্টর প্রতি ১৫০ কুইন্টাল গোবর সার প্রয়োগ করে মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দেওয়া দরকার।
সারের প্রয়োগবিধি- নাইট্রোজেন ৬০ কেজি, ফসফেট ৬০ কেজি ও পটাস ৬০ কেজি দরকার হয়। ফসল গজাতে শুরু করলে ৩৩
কেজি ইউরিয়া এবং শশা বড় হলে আরও ৩৩ কেজি গাছের গোড়ায় চারিদিকে ছিটিয়ে দিতে হবে। জনপ্রিয় শশার মধ্যে জাপানিজ লংগ্রিন এবং চায় না এই দুটো প্রজাতি মানুষ পছন্দ করে। আর হাইব্রিড শশা হল লিবার্টি ও প্রিয়া, এগুলো উচ্চ ফলনশীল হয়।
সেচ- গ্রীষ্মকালীন ফসলে ৪-৫ দিন অন্তর অন্তর সেচ দেওয়া দরকার। মাঝে মাঝে আগাছা পরিস্কার বাঞ্ছনীয়।
ফলন- কচি এবং পুষ্ট দুই অবস্থাতেই শশা তোলা হয়। গাছে ফল ধরতে আরম্ভ করলে দু-তিন দিন অন্তর অন্তর শশা তোলা দরকার। বেশিদিন শশা গাছে থাকলে নতুন ফল ধরা বাধাপ্রাপ্ত হয়। সাধারণত হেক্টর প্রতি ৪০ থেকে ১২০কুইন্টাল শশা পাওয়া যায়। ফল তোলার পরে ঝুড়িতে শশা রাখলে ভালো হয়।