নদিয়ায় লাভজনক অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর ড্রাগন ফলের চাষ
অভিষেক আচার্য, নদিয়া: আলু, ধান, পাট, সব্জিতে দর না মেলায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চাষীদের। সে কথা মাথায় রেখে বিকল্প চাষে চাষীদের ঝোঁকার কথা বলছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। তেমনই ড্রাগন ফ্রুট বা পাটায়া ফলের চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন নদিয়ার কয়েকজন চাষী। অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর এমন ফল চাষে লাভ আছে বলে জানাচ্ছেন নদিয়ার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালযের উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিকরাও।
এই ফলের অরিজিন মেক্সিকোতে হলেও এখন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতে ড্রাগন ফ্রুটের চাষ করা হচ্ছে। ড্রাগন ফ্রুটের আর এক নাম পাটায়া ফ্রুট। নদিয়ার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালযের উদ্যানপালন দফতরের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন ব্লকের চাষীদের চারা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে নদিয়া জেলার হরিনঘাটার ব্লক আধিকারিকরা। ড্রাগন ফল চাষের জন্য পাওয়া যাচ্ছে সরকারি অনুদানও।
ড্রাগন ফল চাষ করছেন হরিনঘাটা ব্লকের কাষ্ঠডাঙ্গা এলাকার চাষী অলিউল্লা মণ্ডল। তিনি বলেন, উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া ও রাঢ় অঞ্চলে এর চাষ ভাল হবে। তবে আর্দ্রতা বেশি থাকলে রোগপোকার আক্রমণ হতে পারে। খুব অম্ল-ক্ষার মাটি ছাড়া সব জমিতেই চাষ করা যেতে পারে। দেখতে হবে মাটিতে যে কোনওভাবেই জল না দাঁড়ায়। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য চাষের থেকে ড্রাগন ফল চাষ করা অনেক লাভজনক। খরচ বেশি হলেও এই ফলের চাহিদা যেন আছে তেমন লাভ রয়েছে। নদিয়ার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানপালন দফতরের ফল বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আবু হাসান বলেন, ক্যাকটাস জাতীয় এই গাছ মাঠে কংক্রিটের পিলার করে তাতে জড়িয়ে দিতে হয়। অন্য চাষের মাঝেও ড্রাগন ফ্রুটের চাষ করা যায়। এই চাষ বেশ লাভজনক। টক-মিষ্টি স্বাদের ফল ড্রাগন ফ্রুট অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর। মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়েছে। ফলে এই ফলের চাহিদাও বাড়ছে এই দেশে। তাই তাঁর বক্তব্য এই ফল উৎপাদন করে চাষীরা অবশ্যই লাভের মুখ দেখতে পারবেন।
নদিয়ার হরিনঘাটার ব্লক আধিকারিক কৃল্লগোপাল ধাড়া বলেন, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালযের উদ্যান দফতর ও হরিনঘাটা ব্লক যৌথ উদ্যোগে ড্রাগন ফল চাষে চাষীদের সাহায্য করছে। ড্রাগন ফল চাষে উদ্যোগী চাষীদের দেওয়া হচ্ছে সরকারি অনুদানও। এখনও পর্যন্ত ২৪ জন চাষী ড্রাগন ফল চাষ করছেন হরিনঘাটা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। এমন বিকল্প চাষে ঝুঁকতে পারেন চাষীরা। গতানুগতিক চাষ ছেড়ে চাষীদের শস্য বৈচিত্র ও আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। যে ফসলে একবার চাষীলাভ পাচ্ছেন, পরের বার ওই ফসলের চাষ আরও বেশি এলাকা জুড়ে করছেন।