বেসরকারি হাসপাতালের বিলে আগুন! অবসাদে আত্মহত্যার চেষ্টা করোনা আক্রান্তের
করোনা আক্রান্তের আত্মহত্যার চেষ্টা মেডিক্যাল কলেজে, কর্মীদের তৎপরতায় উদ্ধার
অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: বেসরকারি হাসপাতালের বিলে নাজেহাল। তাই সরকারি হাসপাতালে এসে মানসিক অবসাদে চারতলার কার্নিশ থেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক রোগী। শনিবার সকালের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় কলকাতা মেডিকেল কলেজে। খবর পেয়ে হাসপাতাল কতৃপক্ষের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। যদিও লাফ মারার আগেই কয়েকজন কর্মী ওই ওয়ার্ডে গিয়ে ধরে ফেলেন ওই ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিংয়ে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের কথায়, শনিবার সকাল সওয়া সাতটা নাগাদ কাঁচ ভাঙার আওয়াজ আসে চারতলা থেকে। ছুটে গিয়ে তাঁরা দেখেন, মেল ওয়ার্ডের ৬ নম্বর বেডে ২ সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত রোগী জানালার কাচ ভেঙে কার্নিশে বসে আছেন। ওয়ার্ডে থাকা অক্সিজেন সিলিণ্ডার দিয়েই তিনি কাঁচ ভেঙেছেন। দ্রুত তাঁকে ধরাধরি করে ওয়ার্ডের ভিতর ঢোকান তাঁরা। অভিযোগ, এই রোগী শুক্রবার রাতে ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন কয়েকজন রোগীকে মারধরও করেছিলেন বলে অভিযোগ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা অশোক নগরের বাসিন্দা ৫৬ বছর বয়সের আবদুল রাখ নামে ওই ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এদিন জানলার কাঁচ ভাঙ্গার আওয়াজ শুনে দৌড়ে আসেন সমস্ত কর্মীরা। পুলিশ এসে ওই রোগীকে বেডে নিয়ে যায়। তাঁকে মনোবিদের দ্বারা কাউন্সেলিং করানো হবে বলে জানানো হয়েছে। এই ঘটনার পরে গোটা হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খবর দেওয়া হয়েছে পরিবারের লোকেদেরও। এরপর পরিবারের লোকেরা এলে হাসপাতালে থাকতে চাইছিলেন না ওই ব্যক্তি। পালিয়ে যাওয়ার জন্যই এই কাজ করেছিলেন বলে জানান তিনি। যদিও উনি অনেকটাই সেরে উঠেছেন। তাই জেনারেল ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে হাসপাতালের পক্ষ থেকে।
জানা গিয়েছে, এর আগে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখানে তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। নিউমোনিয়ার কারণে ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলেও ওই বেসরকারি হাসপাতালটির তরফে জানানো হয়। সেখানে লক্ষাধিক টাকার বেশি বিল হওয়ায় তাঁকে শেষপর্যন্ত মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেই ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।