কলকাতাগুরুত্বপূর্ণপশ্চিমবঙ্গহেডলাইন
ডিজি, সিএসকে তলব অসাংবিধানিক: কল্যাণ

অভিষেক গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা: বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার গাড়িতে হামলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ডেকে পাঠিয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্য সচিব কে। আর সেই ঘটনাকে এবার অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় তোপ দাগেন। তিনি বলেন, ‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিধানসভা ছাড়া অন্য কোথাও জবাবদিহি করতে বাধ্য নয় রাজ্য সরকার।’ এমনকী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেরও মুখ্যসচিব ও ডিজিকে তলব করার এক্তিয়ার নেই বলে দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন বেহালায় দাবি করেন তৃণমূলকে ফেলতেই কেন্দ্রের বিজেপি একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্য সচিব কে তলব করা তারই অঙ্গ বিশেষ।
এদিন কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ জনিয়ে কল্যাণবাবু বলেন, ‘কোন আইনে ডিজি ও মুখ্যসচিবকে তলব করা হয়েছে তা জানাক কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিহাসে এমন ঘটনার নজির নেই। থকলে আমাকে দেখাক।’
অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তায় কোনো গাফিলতি ছিল না। উলটে জেপি নড্ডার বিরুদ্ধেই আইনভঙ্গ করার ও দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুললেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার জেপি নড্ডাকে বুলেট প্রুফ গাড়ি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর কনভয়ের আগে ছিল এসকর্ট। রাজ্য পুলিশের তরফে এসকর্টের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। একজন জেড ক্যাটাগরির নিরপাত্তা প্রাপক হিসাবে তাঁর কনভয়ে অ্যাডিশনাল এসপি ছিলেন ৮ জন, ডেপুটি পুলিশ সুপার ছিলেন ৮ জন, ৩০ জন ইন্সপেক্টর ছিলেন, ৪০ জন র্যাফ ও ১৪৫ জন কন্সটেবল ছিলেন। অর্থাৎ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।নড্ডার কনভয়ের সামনে অন্তত ৫০টি গাড়ি ছিল। গাড়ি ছিল পিছনেও। সঙ্গে ছিল প্রায় ৪০টি মোটরসাইকেল। একজন জেড শ্রেণির নিরাপত্তা প্রাপকের কনভয়ের সামনে – পিছনে অন্য কোনও গাড়ি থাকতে পারে না। অর্থাৎ নড্ডা বেআইনি কাজ করেছেন।’
একই সঙ্গে বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেন কল্যাণ। বলেন, রাকেশ সিং নামে এক ব্যক্তি তৃণমূলের মঞ্চের সামনে গাড়ির দরজা খুলে প্ররোচনামূলক অঙ্গভঙ্গি করেন। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৫৯টি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই ধরনের একজন দুষ্কৃতী নড্ডার কনভয়ে কী করছিলেন? কল্যাণবাবু জানান, ইতিমধ্যে রাকেশ সিং সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা পুলিশ।
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এদিন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত একই সুরে বিধলেন কেন্দ্রে বিজেপিকে। তিনি স্পষ্ট জানান তৃণমূলকে বিপাকে ফেলতে কেন্দ্রের বিজেপির উদ্যোগ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নানা দিক থেকে বিজেপির আক্রমণ আসছে। যারা বাংলাকে পছন্দ করে না, যারা বাংলার মানুষকে উপেক্ষা করে, বাংলার উন্নয়ন কে বিশৃঙ্খল করার চেষ্টা করে, তারা নানা ধরনের পরিকল্পনা করে যাচ্ছেন তৃণমূলকে বিপাকে ফেলার জন্য। যত হামলা করো সব সামলে নেব। এটাও হামলারই অঙ্গ।’