পরিয়ায়ী শ্রমিকদের ট্রেনভাড়া না দিয়ে ওই টাকা ওঁদের অ্যাকাউন্টে দিন দিদি: রাহুল
রক্তিম দাশ, কলকাতা: ‘পরিয়ায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ভাড়া না দিয়ে ওই টাকা ওঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠিয়ে দিন।’ মুখ্যমন্ত্রীকে রবিবার এই পরামর্শ দেন রাহুল সিনহা।
শনিবারই টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘ভিন রাজ্যে আটকে পড়া পরিয়ায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফিরিয়ে আনতে রেলভাড়া রাজ্য সরকার দেবে।’ তাঁর সেই টুইটকে কটাক্ষ করেই এদিন একথা বলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক।
রাহুল সিনহা বলেন, ‘রেল ভাড়া নিয়ে টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ভাড়া দিয়ে দেবেন। আমার প্রশ্ন, রাজ্যের কি টাকা বেশি হয়েছে? এতদিন তো দিদি চিৎকার করছিলেন রাজ্যের ভাড়ারে টাকা নেই টাকা নেই বলে। তা এখন উনি এত টাকা পেলেন কোথায় যে পরিযায়ী শ্রমিকদের সব রেলের ভাড়া একাই মিটিয়ে দেবেন?’
রাহুলের পরামর্শ, ‘রেলের ভাড়া ৮৫ শতাংশ কেন্দ্র আর ১৫ শতাংশ রাজ্যকে দিতে হবে। আমি বলছি, পরিযায়ী রেলভাড়ার টাকা দিদির দেওয়ার দরকার নেই। উনি ওই টাকাটা শ্রমিকদের দিন। শ্রমিকদের হাতে দিতে বলতে পারছি না। কারণ, দলটার নাম তৃণমূল। টাকা হাতে দিলে তার থেকেও কাটমানি খাবে। টাকাটা শ্রমিকদের ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পাঠান। আমরা একটু দেখি।’
রেলের ভাড়া থেকেও এখন গুরুত্বপূর্ণ ভিনরাজ্য থেকে কত দ্রুত বাংলার শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা যায় বলে এদিন মন্তব্য করেন বিজেপির এই কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। রাহুল বলেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের ভাড়া কে দেবে তা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। কবে তাঁরা ফিরবেন তা নিয়ে ওঁর মাথা ব্যাথা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য ১০৫টি ট্রেনের ব্যবস্থা করেছেন। এমনিতেই লকডাউনের ৫০ দিন অতিক্রান্ত। এত শ্রমিক বাড়ি ফেরার জন্য আর কতদিন অপেক্ষা করবেন? উনি ৭ দিনে ১০০ ট্রেন চান। তারপর ৭ দিন পর আরও একশো ট্রেন চান। এভাবে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করে দ্রুত শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনুন। কেন্দ্র সরকার নিশ্চয়ই তার ব্যবস্থা করবে। আমরা দরকার হলে বিষয়টি নিয়ে রেলমন্ত্রীকে বলব। শ্রমিকদের আর যেন পায়ে হেঁটে বাংলায় ফিরতে না হয়।’
এদিন দেশের মধ্যে করোনায় মৃত্যুর হারের শতাংশে বাংলা সবচেয়ে এগিয়ে বলে উল্লেখ করে রাহুল বলেন, ‘সংক্রমণ গোপন করে, মৃতদেহ লুকিয়েও যে মৃত্যুর হার সামনে এসেছে তাতেও বাংলা একনম্বর। এত মৃতদেহ লোপাটের ঘটনা যদি না হত তাহলে সংখ্যাটা কত হত? পুরো স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কী অবস্থা! নার্সরা চলে যাচ্ছেন! কারণ, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নেই। তাঁদের জোর করে দমন-পীড়ন করে কাজ চলছে। রাজ্য সরকার এখনও রাজনীতি বন্ধ না করলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হবে।’
রাহুলের আশঙ্কা, ‘বেসরকারি পরিষেবা অচল হলে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাও অচল হবে। কারণ, বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত।’