পুলিশের টিএমসিকরণ করেও সরকার বাঁচবে না: দিলীপ ঘোষ

শরণানন্দ দাস, কলকাতা: বিজেপির নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপান উতোর অব্যাহত। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শুক্রবার বিকেলে রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি তোপ দাগলেন ‘পুলিশের টিএমসিকরণ’ হয়েছে।
তিনি এদিন বলেন, ‘ পুলিশ সমাজবিরোধীদের মতো কাজ করেছে। ভিডিওতে ধরা পড়েছে ছাদ থেকে পুলিশ বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়েছে। যেভাবে পুলিশ আমাদের কর্মীদের লাঠিপেটা করেছে শত্রুর সঙ্গেও কেউ এতো নির্মম আচরণ করে না। আমি জানি না পুলিশের এই আচরণ সংবিধান সম্মত কী না। ‘
মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, ‘ একটা জিনিষ স্পষ্ট, তৃণমূল টেনশনে পড়ে গিয়েছে। তাই পুলিশকে ক্যাডার বাহিনী হিসাবে কাজে লাগিয়েছে। পুলিশেরও তৃণমূলের সঙ্গে থেকে বুদ্ধিভ্রশ হয়েছে। আমি জানিনা এভাবে সরকার বাঁচানো যায় কি না। আমার বিশ্বাস পুলিশের ভরসায় সরকার বাঁচে না।’
তিনি বলেন, ‘ পুলিশ জলকামানের সঙ্গে যে রাসায়নিক মিলিয়েছিলেন তা নজিরবিহীন। এর আগে একবার জম্মু কাশ্মীরের উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে এই রাসায়নিক ব্যবহার হয়েছিল , উগাণ্ডার মতো আফ্রিকার দেশগুলোতে সন্ত্রাসবাদীদের শায়েস্তা করতে এগুলো ব্যবহার করা হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার চিন্তাভাবনা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ আমাদের সফল নবান্ন অভিযানে ভয় পেয়ে রাজ্য সরকার বিজেপির ২৪ জন শীর্ষ নেতার নামে মামলা করেছে। আমরা এসবে অভ্যস্থ। এই কোভিড পরিস্থিতিতেও আমাদের ১২ জন কর্মী খুনের হয়েছেন। নিহত কর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে গেলেও মামলা হচ্ছে। হেমতাবাদের নিহত বিধায়ককে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে গিয়েছিলাম, আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা আইনের পথে লড়বো।’
এদিন করোনা পরিস্থিতিতে তিনি আবেদন করেছেন দুর্গাপুজো করুন, উৎসব করবেন না। তিনি বলেন,’ পুজো কমিটি ও সাধারণ নাগরিকদের কাছে আবেদন করবো দুর্গাপুজো অবশ্যই করুন, তবে উৎসবটা বন্ধ রাখুন। প্রার্থনা করুন মায়ের আশীর্বাদে তাড়াতাড়ি যেন এই অতিমারি থেকে মুক্তি পাই।’ একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘ দিদিমণি যখন উৎসবের কথা বলেন, তখন ভয় হয়। হোলি হয়নি, রামনবমী, পয়লা বৈশাখ,ইদ এবং মহরমও হয়নি। হোলির যে খামতি ছিল পূর্ণ করে দিয়েছেন মুখ্যসচিব। বলেছিলেন হোলির রং দেওয়া হয়েছিল।’
এদিন তিনি জানিয়েছেন, পুজোর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসছেন। প্রথমে উত্তরবঙ্গে আসবেন, তবে কোন পুজো উদ্বোধন করবেন না। দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলে জানানো হবে। রাজ্য দফতরে এদিন দুই প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের রামনগরের প্রাক্তন বিধায়ক স্বদেশ নায়েক ও গাজোলের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সুশীল চন্দ্র রায় বিজেপিতে যোগ দেন।
এদিন সন্ধ্যায় বিজেপি রাজ্য দফতরে থেকে গান্ধিমূর্তি পর্যন্ত তৃণমূলের পুলিশিরাজের প্রতিবাদে মৌন মিছিল হয়। মিছিলে অর্জুন সিং, লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ বিজেপি নেতৃত্ব ও কর্মীরা যোগ দেন।