দিলীপ আউট, বঙ্গ বিজেপির স্টিয়ারিং সুকান্ত মজুমদারের হাতে

ইন্দ্রাণী দাশগুপ্ত ,নিউ দিল্লি: রাজ্য বিজেপিতে বড়সড় পরিবর্তন! বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরলেন দিলীপ ঘোষ, আর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন বালুরঘাটের সাংসদ ড. সুকান্ত মজুমদার। বঙ্গ বিজেপি-র স্টিয়ারিং তাঁর হাতেই তুলে দিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পুজোর আগেই এমন বড়সড় রদবদল হল বঙ্গ বিজেপিতে। রাজ্য সভাপতি থেকে পদোন্নতি ঘটিয়ে দিলীপ ঘোষকে করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর থেকেই দিলীপ প্রতি পদক্ষেপে তৃণমূলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন। গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপি অভাবনীয় ফল করে। একুশের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে না পারলেও বিজেপির আসন সংখ্যা অনেকটাই বাড়ে। তাই দিলীপকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নিয়ে এলেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
সোমবার সন্ধ্যায় সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার নির্দেশে নতুন রাজ্য সভাপতি হলেন সুকান্ত মজুমদার। পরপর দুটি নোটিসের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গ বিজেপি সংগঠনে দুটি পরিবর্তন করেন। প্রথমটি সুকান্ত মজুমদার এবং দ্বিতীয়টি কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষের নাম ঘোষণা করা।
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন ধরেই সুকান্ত মজুমদারের রাজ্য সভাপতি হওয়া নিয়ে জল্পনা চলছিল। সূত্রের খবর, সুকান্ত মজুমদারের নাম রাজ্য সভাপতি পদে প্রস্তাব করেছিলেন দিলীপ ঘোষই। দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ তরুণ তুর্কি অধ্যাপক সুকান্ত মজুমদারকে সহজেই বেছে নিয়েছে দল। সুকান্ত মজুমদার এর আগে বালুরঘাটের জন্য একাধিক প্রকল্প আদায় করে এনেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে। এভাবেই তিনি নজর কেড়েছিলেন সংঘ তথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।
নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন,” দিলীপ ঘোষরা যেভাবে কাজ করেছেন, সেভাবেই দলকে সঙ্ঘবদ্ধ করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। বিজেপি একটি সাংগঠনিক দল। এই দলে যতদিন কর্মীরা আছেন, ততদিন দলের একতা, ঐক্যবদ্ধতার ভিতে কেউ থাবা বসাতে পারবে না। আমাদের কর্মীরাই আমাদের সম্পদ। ছোটবেলা থেকে আমাদের শেখানো হয়েছে নেমপ্লেটে নামের পাশে যে উপাধি থাকুক না কেন, আমরা আসলে বিজেপির একজন সাধারণ কর্মী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দেখে আমরা সাধারণ ভাবে জীবনযাপন করতে শিখি। কয়েকদিন আগে আপনারা দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও মোদীজি সংসদে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তৃতা করার সময় নিজের ছাতা নিজের হাতেই ধরেছিলেন। বিজেপি কর্মী মানেই দেশের জন্য উদ্বুদ্ধ এক একটি প্রাণ। আগামী লোকসভা এবং পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ফলাফল যাতে গগনচুম্বী হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাব নিরন্তর।” সেই সঙ্গে তিনি বলেন,” বাঙালির ভবিষ্যৎ ও বাঙালির অস্তিত্বের জন্যই বিজেপির শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন”।
এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানান, “কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে আমি খুশি। বরাবরই আমি সংগঠনকে ভালোবাসি।সাংগঠনিক নেতা হিসেবে কাজ করতে চাই। এতদিন দলের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গে সংগঠন সামলেছি। বিজেপির সংবিধান অনুযায়ী ছয় বছর আমার রাজ্য সভাপতি থাকার সময়কালও প্রায় শেষ। এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হিসেবে দলের নির্দেশে কাজ করব। সুকান্ত মজুমদার অত্যন্ত দক্ষ এবং পরিশ্রমী একজন সাংসদ এবং দলের কর্মী। আমার বিশ্বাস সুকান্তর হাত ধরে ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি উন্নয়নের শিখরে পৌঁছবে।”