প্রকৃতির রোষে মৌসুনি দ্বীপ! মেলেনি সরকারি আশ্বাস

বিশ্বজিত হালদার নামখানা: ভরা কোটাল ও নিম্নচাপের জোড়া ফলায় আবারও তছনছ হল মৌসুনি দ্বীপ। বাদ যায়নি এই দ্বীপের বাসিন্দাদের উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হোম স্টে ট্যুরিজম। গত কয়েক বছর ধরে শহুরে মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে এই হোম স্টের আবাসগুলি। বঙ্গোপসাগরের বালিয়াড়িতে ঝাউবনের ভেতর প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্রগুলি গড়ে উঠেছে। বেশীরভাগ কাঠ, টিন, প্লাইউড দিয়ে তৈরী। কংক্রিটের ব্যবহার নেই বললেই হয়। কিন্তু কোটালের জেরে জলস্তর বৃদ্ধির ফলে পর্যটনকেন্দ্রগুলি কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে। টানা লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এই পর্যটনকেন্দ্রগুলি। স্থানীয় যুবকদের অনেকেই ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে এই কেন্দ্রগুলি তৈরী করেছেন। ফলে সবকিছু নতুন করে তৈরী করা অনেকের পক্ষে কষ্টসাধ্য। অনেকেই সরকারি সাহায্যের আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও কোন সরকারি আশ্বাস মেলেনি বলে অভিযোগ।
বকখালি যাওয়ার পথে নামখানার দশমাইল বা সাতমাইল বাসস্টপ থেকে মোটরভ্যান ও নৌকায় চেপে পৌঁছতে হয় এই দ্বীপে। চারদিকে নদী ও সমুদ্র দিয়ে ঘেরা। আয়লার পর থেকে প্রতিনিয়ত ভাঙন লেগে আছে। দ্বীপের আয়তন ক্রমে ছোট হচ্ছে। বাসিন্দাদের অনেকেই অন্যত্র চলে গেছেন। কিন্তু কিছু মানুষ প্রকৃতির রোষ সহ্য করে ভিটেমাটির টানে থেকে গিয়েছেন এই দ্বীপে। মাছ ধরা ও চাষবাস এই দ্বীপের বাসিন্দাদের রোজগারের মাধ্যম। বছর দুই আগে দ্বীপের ঝাউবন আর বালিয়াড়ার মধ্যে কয়েকটি হোম স্টে কটেজ বানান। শুরু হয় অনলাইন বুকিং। নির্জনে সময় কাটানোর পাশাপাশি মাছ, কাঁকড়া খাওয়ার সুন্দর ব্যবস্থা আছে এখানে। সবটাই পরিচালনা করেন স্থানীয় মানুষেরা। বর্তমানে প্রায় ৪০টি পর্যটন আবাস আছে এখানে। বেশীরভাগ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঝাউগাছ ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে পর্যটন আবাস। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে এলাকাগুলি। সমস্ত বুকিং বাতিল করা হয়েছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর আবারও বড় কোটাল। আবারও আতঙ্ক তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এক পর্যটন আবাসের পরিচালক প্রদ্যুত মণ্ডল বলেন,‘ প্রকৃতির রোষে বারে বারে সব তছনছ হয়ে যাচ্ছে। এবার সমুদ্রের জল সব ভাসিয়ে নিয়ে গেল। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে এমনিতে প্রচুর লোকসান হয়েছিল। তারপর লকডাউন। সরকারি সাহায্য পেলে আবার ঘুরে দাঁড়ানো যাবে।’