
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: করোনা আক্রান্তরা তো বটেই, এমনকি তাঁদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী ও তাদের পরিবারকে হেনস্থা হতে হচ্ছে মাঝেমধ্যেই। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করেন বলে তাদের থেকেও সংক্রামিত হওয়ার ভয় পাচ্ছেন অনেকে। এমনই ঘটনা ঘটল বেহালা সরশুনা থানার বসন্ত পার্কে। এক চিকিৎসকের দাদাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে এবং হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বেশ কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে গ্রেফতার করেছে ৫ জনকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে চিকিৎসক সৈকত বসুর দাদা সুদীপ্ত বসুর সঙ্গে। তাদের বাড়ি সরশুনা এলাকার বসন্ত পার্কে। সৈকতবাবু বর্তমানে তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে বিষ্ণুপুর ১ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং মহেশতলা সেফ হোমের চিকিৎসকের দায়িত্বপ্রাপ্ত। উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গের করোনা রোগীদের চিকিৎসা করছেন তিনি। এর আগে একাধিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
অভিযোগ, গত মাস দেড়েক ধরেই তাঁকে ও তাঁর বাড়ির লোকেদের হুমকি দিচ্ছিল এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। কেন তিনি বাড়িতে ঢুকছেন, তা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলছিলেন অনেকেই। সেই কথাকে কেন্দ্র করেই মঙ্গলবার দুপুরে সৈকতবাবুর দাদা সুদীপ্ত বসু বাড়ির বাইরে বেরোলে হঠাৎই পাড়ার কয়েকজন তাঁর উপর চড়াও হয়। কেন তিনি বাইরে বেরিয়েছেন, সেই প্রশ্ন তোলা হয়। সুদীপ্তবাবু জানান, তিনি প্রয়োজনীয় কাজে বেরিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও তারা কোনও কথা শোনেনি।
অভিযোগ, রাস্তার ওপরে তাঁকে মারতে শুরু করে পাড়ার কয়েকজন। তাঁর মাথা ফেটে যায়, হাত ভেঙে যায়। আঘাত লাগে ঘাড়ে ও পায়ে। এমনকী তাঁর গলার চেন ছিনতাই করে অভিযুক্তেরা চম্পট দেয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ৭ জনের রিপোর্টে কোভিড-১৯ পজেটিভ, চাঞ্চল্য
এদিন এই ঘটনার পরে সৈকতবাবু জানান, অধিকাংশ দিনই তিনি অনেক রাতে বাড়ি ফেরেন। রাতে নিজের আলাদা ঘরেই থাকেন। সাধারণভাবে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে সংস্পর্শে আসেন না। রাতটুকু বাড়িতে থেকে সকালেই বেরিয়ে যান। আর সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিয়ে তিনি করোনা রোগীদের চিকিৎসা করেন। তা পাড়ার লোকেদের জানাবার পরেও তাঁরা শুনতে চাননি। তারা নিদান দেয়, সৈকতবাবুর পুরো পরিবারকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সেই কথা না শোনাতেই ওই দিন সৈকতবাবুর দাদাকে মারধর করা হয়। যদিও অভিযোগ পেয়েই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। সৈকতবাবু ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।