আমফানের তান্ডবে খেজুরিতে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি, দুর্ভোগ চরমে
ভীষ্মদেব দাশ, খেজুরি (পূর্ব মেদিনীপুর): ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে খেজুরিতে। আমফান তাণ্ডবের ৭দিন পার হলেও সাধারণ মানুষের খোঁজ নেয়নি জনপ্রতিনিধি থেকে প্রশাসন বলেই বাসিন্দাদের ক্ষোভ।
ঝড়ের তান্ডবে ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সম্পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে খেজুরি-১ ব্লক এলাকায় প্রায় ১৬হাজার মাটি বাড়ি, পাকা ও আধা পাকা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হেঁড়িয়া হাই স্কুল, কলাগাছিয়া হাই স্কুল সহ ৭০ টি প্রাথমিক এস এস কে, এমএসকে ও মাধ্যমিক স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ব্লক তরফে জানা গিয়েছে। এলাকায় সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উচ্ছে, পটল, ঝিঙে, ধ্যাড়স সহ সব্জি বাগান নষ্ট হয়েছে। প্রায় ১হাজার পান বরোজ ক্ষতি হয়েছে। ব্লক প্রশাসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে জেনারেটর চালিয়ে জল দেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসনের দাবি। তবে খেজুরির অধিকাংশ এলাকায় বাসিন্দারাই টাকা তুলেই জেনারেটর এনে জল তুলছেন। কোথাও ১০দিনে ১০০টাকা কোথাও ৫০টাকা চাঁদা দিয়েই জল পাচ্ছেন বাসিন্দারা। থানা জুড়ে বিভিন্নপ্রান্তে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। ব্লক এলাকায় আনুমানিক ৪০০বেশি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে।
বিদ্যুৎকর্মীরা তৎপরতার সাথে কাজ করায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হয়েছে। অপরদিকে খেজুরি-২ ব্লকের ১৭হাজারের বেশি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে অর্থকরী পান চাষে। প্রায় ৩হাজার বরোজ মাটিতে মিশে গিয়েছে। প্রায় ১০হাজার বরোজ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। কশাড়িয়া হাইস্কুল, বিদ্যাপীঠ হাইস্কুল সহ ১২০টি প্রাথমিক, এসএসকে, এমএসকে স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি, ট্রান্সফরমার, ভেঙে পড়ায় এখনও বিদ্যুৎহীন খেজুরি-২ব্লক এলাকা। বন্ধ সাবমার্সিবল পাম্প তাই ভরসা টিউবওয়েল। ৫-১০ কিলোমিটার পথ হেঁটে জল আনছেন সাধারণ মানুষ। কোথাও চাঁদা তুলে জেনারেটর চালিয়ে চলছে জল তোলার কাজ।
তবে খেজুরি-১ ও ২ ব্লকে একাধিক জায়গায় কেবিলের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে কেবিল পরিষেবা। ১ ব্লকের বিডিও তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ১৫১কোটি টাকারও বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে তাদের ত্রাণ ও ত্রিপল দেওয়ার কাজ চলছে।এলাকায় স্বাভাবিক জনজীবন ফিরিয়ে আনতে এনআরজিএস প্রকল্পের কাজ খুব শিগগির শুরু করা হবে। খেজুরি-২ ব্লকের বিডিও রমল সিং বির্দি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক। দ্রুত গতিতে সব কাজ চলছে। ২দিনের মধ্যে পাণীয় জল সমস্যা দুর করার চেষ্টা করছি।
লকডাউনে কর্মহীন শ্রমিকদের ১০০দিনের কাজে নেওয়া হবে। এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যুৎকর্মীরা। আমরা খুব শিঘ্রই সাধারণ ছন্দে ফিরে আসতে পারবো আশা করছি।