দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ৫০,০০০ টাকা সাহায্য, কার্নিভাল বাতিল ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: কোভিড পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজো উপলক্ষে এলাকার বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে বিশেষ রিপোর্ট জমা দিতে আগেই ডিজির মাধ্যমে সমস্ত পুলিশ কমিশনার থেকে পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তিনি বৃহস্পতিবার সশরীরে হাজির থাকলেন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে শহরের সমস্ত পুজো কমিটিগুলির সমন্বয় বৈঠকেও। সেখানে করোনা পরিস্থিতির কারণে শহরের সমস্ত দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ৫০০০০ হাজার টাকা করে সাহায্যের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ এবং দমকল, পুরসভা ইত্যাদি একাধিক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। একই সঙ্গে এবারে দুর্গাপূজা কার্নিভাল বাতিল ঘোষণা করেছেন তিনি।
যদিও পুরোটাই আসন্ন একুশের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ঘোষণা বলে দাবি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। এর আগেও দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে অনুদান দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তিনি ফের বলেন, ‘করোনা কালে ইতিমধ্যেই ২৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তবু করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এই অনুদান ও ছাড় ঘোষণা রাজ্য প্রশাসনের।
[আরও পড়ুন- ফের কলকাতায় বাড়ছে সংক্রমিত এলাকা]
এছাড়াও পুজোর আয়োজনে একাধিক নির্দেশিকা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজো কমিটিগুলিকে তিনি বলেছেন, মণ্ডপ খোলামেলা করতে হবে। ফিজিক্যাল ডিসট্যান্সিং’ বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পুজো উপলক্ষ্যে কোনওরকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবারে নিষিদ্ধ। স্বেচ্ছাসেবীদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা রাখতে হবে। দর্শকদের জন্য মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। অঞ্জলি, ভোগ থেকে সিঁদুর খেলা সমস্ত কিছুই দূরত্ব বজায় রেখে করতে হবে।
২ অক্টোবর থেকে কলকাতা পুলিশের ‘আসান’ পেজের মাধ্যমে অনুমতি দেওয়া শুরু হবে। ন্যূনতম ১০ বছর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পুজো কমিটিই এবারে ছাড়পত্র পাবেন। পুজোয় যারা শারদ সম্মান দেন, তারা সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ৩ টের মধ্যে দুটি গাড়িতে ঘুরতে পারবেন। পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারকেরা ২টি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। ভার্চুয়াল ভাবেই বিশ্ববাংলা পুরষ্কারও দেওয়া হবে। প্রত্যেক মণ্ডপের সামনে সচেতনতা পোস্টার লাগাতে হবে, তার মধ্যে কোভিড হেল্পলাইন এর উল্লেখ থাকবে। কোনওরকম শোভাযাত্রা ছাড়া নির্দিষ্ট ঘোষিত দিনে বিসর্জন করতে হবে। এইবছর রেড রোডে কোনওরকম পুজো কার্নিভাল হবে না জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, সামনের বছর কার্নিভালের আনন্দ দ্বিগুণ করে হবে।
এছাড়াও এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোয় যারা হকারি করেন, তাঁদের জন্য মাসিক ২,০০০ টাকা সরকারি অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করেন। রাজ্য সরকারের কাছে নথিবদ্ধ ৮১ হাজার হকারকে পুজোর মাসে ২ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেওয়া হবে বলা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে পুলিশ দিবসে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে, রাজ্যের সব অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অবসরের পরে এককালীন ৩ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। এদিন সেইমত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের ঘোষণা করেন যে, একই ঘোষণা করে জানান যে, রাজ্য সরকারের নথিভুক্ত পুরোহিত, ইমাম, ফাদারদের নিজস্ব জমি থাকলেও যাঁরা বাড়ি করতে পারছেন না তাঁদের সরকার এককালীন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেবে।