
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মা দুর্গার আরাধনায় দ্বিধাবিভক্ত বাংলার চিকিৎসক। একদিকে চিকিৎসকদের একাংশ যখন করোনার সংক্রমণের থেকে বাঁচতে উৎসব মুলতুবি রাখার পক্ষে সওয়াল করছেন তখন কীভাবে চিকিৎসকদের অন্য আর এক অংশ দুর্গাপুজোর আয়োজনে মেতেছেন? স্বাভাবিক ভাবেই এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে আম জনতার মনে। সম্প্রতি দুর্গাপুজোর বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন একদল চিকিৎসক। তাদের মতে দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে রাজ্যে করোনা সুনামি ধেয়ে আসবে।
এদিকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে একদল চিকিৎসক দুর্গাপুজোর অনুমতি চেয়ে চিঠি দিলেন। তাদের মতে চিকিৎসা ব্যবস্থা একটি জরুরী পরিষেবা। সাধারণ মানুষের স্বার্থে এই পরিষেবাকেও বহাল রাখতে হবে। তাই পুজোর সময় চিকিৎসক অর্থাৎ এই সব কোভিড যোদ্ধাদের নিজেদের যুদ্ধ ক্ষেত্রে থাকবেন। সেক্ষেত্রে করোনা চিকিৎসার প্রাণকেন্দ্র কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এবছর মণ্ডপ বেঁধে, প্রতিমা এনে দুর্গাপুজোর আয়োজন হচ্ছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
হাসপাতাল চত্ত্বরে দুর্গাপুজো করতে চেয়ে চিকিৎসকদের একাংশ সপ্তাহদুয়েক আগে দুর্গাপুজোর অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের অনুমতি দেয়নি। দিন পনেরোর টানাপোড়েন শেষে বয়েজ হস্টেলের সামনে সেই পুজোর অনুমতি মিলেছে। অতিমারীর সময় খাস করোনা হাসপাতালে মণ্ডপ তৈরি করে পুজো হলে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থাকবে। এমনটাই মত আম জনতার। এ ছাড়াও প্রশ্ন উঠছে করোনা হাসপাতালে অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ নিয়েও। কারণ করোনা চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীরা আসেন। তাঁদের চিকিৎসা হয়। তাই সেখানে পুজোর আয়োজন নিয়ে কতটা হাইজিনিক।
তবে মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, সাত মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম চলছে। চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মীরা বহুদিন বাড়ি যাননি। পরিজনদের সঙ্গে দেখা হয়নি। সাতদিন ডিউটি এবং ৭ দিন কোয়ারেন্টাইনে থেকে দিন কাটছে। তাই হস্টেল চত্ত্বরের এই পুজো তাঁদের মানসিক স্বস্তি দেবে। কটাদিন উৎসবের আমেজ থাকলে তাঁদেরও মন ভাল হবে। তাঁদের আরও বক্তব্য, পুজোর জায়গা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে হস্টেল প্রাঙ্গন। মেডিক্যাল কলেজের পুজোর আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকা চিকিৎসকদের যুক্তি, হাসপাতাল ক্যাম্পাসের বাইরে অনেকটা নিরাপদ দুরত্বে এই মেন হস্টেল প্রাঙ্গন। ফলত সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা শূন্য।