দীপাবলিতে বিলুপ্তির পথে মাটির প্রদীপের প্রাচীন প্রথা

দীপঙ্কর দে, ইসলামপুর: বর্তমানে ৫ জি’র যুগে রংবাহারি বৈদ্যুতিক লাইটের মাঝে হারিয়ে যেতে বসেছে দীপাবলি উৎসবে মাটির প্রদীপের প্রাচীন প্রথা। দীপাবলি উৎসবের আগে ইসলামপুরের পালপাড়া এলাকায় এমনই ছবি ধরা পড়ল। প্রতিবছর কিছু-না-কিছু ব্যবসা হয়ে থাকলেও এবছর মৃৎশিল্পীদের এই পালপাড়ায় মাটির প্রদীপ কিনতে আসা গ্রাহকদের দেখা নেই। করোনা সংক্রমণের জেরে যখন বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় লাটে উঠতে বসেছে তখন সেই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের বাজি নিষিদ্ধের নির্দেশে খানিকটা আশা জাগিয়েছিল পালপাড়ার মৃৎশিল্পীদের। এই আশা আরও জোরদার হয়েছিল যখন বাজারে মিলছিল না চিনা লাইট। তবে গ্রাহকদের অনুপস্থিতি সেই আশাকে নিরাশায় পরিণত করেছে।
আরও পড়ুন: শ্যামাসংগীত রচনার নেপথ্যে কালীসাধক নজরুল
ইসলামপুরের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা জানিয়েছেন, এক কিলো জ্বালানি ৭ টাকা খরচ পরে। এক ট্রাক্টর মাটি ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। তারপর রং পারিশ্রমিক এসব মিলিয়ে ৮০০ টাকা হাজার প্রতি মাটির প্রদীপ বিক্রি করে তেমন কিছু লাভ হয় না। তবুও প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ইসলামপুর পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা। পাশাপাশি এও জানিয়েছেন, তাদের পরিবারের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা একাজে উৎসাহ দেখায় না। পাশাপাশি ব্যবসায় লাভ না থাকার কারণে আগামী দিনে মাটির প্রদীপ বাজার থেকে অমিল হতে চলেছে এমনই আশঙ্কা করেছেন ইসলামপুরের মৃৎশিল্পীরা। এছাড়াও সরকারি কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় এই ব্যবসা ছেড়ে দিন প্রতিদিন মানুষ অন্য লাভবান ব্যবসার দিকেই ঝুঁকছেন। যা পরিস্থিতি তাতে ভবিষ্যতে বাংলার বুক থেকে বিলুপ্তির পথে মাটির প্রদীপের এই প্রাচীন প্রথা সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।