যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের । বেকারত্ব ও ক্ষিদে জ্বালায় প্রায় ১০ মিলিয়ন পরিযায়ী শ্রমিক দেশের বিভিন্ন বড় বড় শহর থেকে বেড়িয়ে নিজেদের গ্রামে চলে গিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে যখন দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে নিজের জায়গায় ফেরার চেষ্টা করছে, ঠিক তখনই দেশজুড়ে শ্রমিকদের অভাব দেখা দিয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের ফলে শহরে এখনই ফিরতে চান না পরিযায়ী শ্রমিকরা। অর্থনীতির সঙ্গে এই সমস্ত সমস্যার মধ্যে, পরিযায়ী শ্রমিকরা এখনই শহরে ফিরতে রাজি নন, কারণ একে তো মারণ ভাইরাসের ভয় ও দ্বিতীয়ত কাজের অনিশ্চয়তা। যদিও রাজ্যগুলি বিভিন্ন অনুপ্রেরণামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও ভারতের অর্থনীতি ৪০ বছরেরও বেশি সময়ে প্রথম সঙ্কোচনের জন্য ছুটে চলেছে, তাও আবার পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক আবহাওয়ার মধ্যে।
শহরের শিল্পগুলিতে এখন পর্যাপ্ত শ্রমিকের অভাব রয়েছে, তাই এখনই তারা তাদের সক্ষমতাতে ফিরতে পারছে না, অন্যদিকে গ্রামীণ রাজ্যগুলি আশঙ্কা করছে যে শহর থেকে যদি অর্থের প্রবাহ না আসে তবে গরীব পরিবারগুলির অবস্থা আগের চেয়েও খারাপ হয়ে যাবে, বিনিময়ে যা রাষ্ট্রীয় মজুতগুলিতে আরও চাপের সৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুন: ‘বাংলা নিয়ে মিথ্যাচার করছেন সীতারামন’, সাফ জবাব অমিতের
ভারতীয় পরিযায়ী সংস্থার তথা মুম্বইয়ের গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি গ্রুপের কর্ণধার বরুণ আগরওয়াল বলেন, ‘স্বল্পমেয়াদি চক্রাকার পরিযায়ীদের পরিবার, যাঁরা দুর্বল, দরিদ্র, নীচু জাতি ও আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে এসেছেন, তাঁদের কাছে বিশাল অর্থনৈতিক ধাক্কা লাগবে।’ মুম্বইয়ের ফাইনো পেটেক লিমিটেডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ঋষি গুপ্তা বলেন, ‘প্রথম ১৫ দিনের লকডাউনে ঘরোয়া নগদ ৯০ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। মে মাসের শেষে নগদ ফের ফিরে আসে ১৭৫০ (২৩ ডলার)-এ, যা প্রাক-কোভিড গড়ের অর্ধেক, আর আমরা জানিও না কবে এই পরিস্থিতি শুধরাবে এবং পরিযায়ীদেরও ফেরার কোনও তাড়া নেই। হয়ত তারা এটাও বলতে পারে যে তারা ফেরার বিষয়ে ভাবছেই না।’
পরিযায়ী শ্রমিকরা যদি দীর্ঘ মেয়াদ পর্যন্ত নিজেদের গ্রামে থাকেন তবে নীতি নির্ধারকদের কাছে আর্থিক সমস্যা আর ঘনীভূত হবে এবং চিন্তার আরও কারণ তৈরি হবে। আর এভাবেই যদি চলতে থাকে তবে অর্থনীতিতে দ্বিতীয়বার ধাক্কা লাগতে পারে যা সামগ্রিকভাবে মোটেও ভালো নয়।