ঘরেই ঈদ উৎসব, করোনা মুক্ত ভারতবর্ষের জন্য ঈদের নমাজ থেকে প্রার্থনা মুসলিমদের
মোকতার হোসেন মন্ডল: কলকাতার রেড রোড থেকে শুরু করে বিভিন্ন মসজিদ, লকডাউনের ঈদে সেই ভিড় নেই। এবার মিষ্টি, সিমাই পায়েস খেয়ে ঘরে ঘরেই ঈদ উৎসব করেছে বাঙালি মুসলিম। সেই সঙ্গে করোনা মুক্ত ভারতবর্ষের জন্য সোমবার ঈদের নমাজ থেকে প্রার্থনা করেন ইমাম, মাওলানা ও মুসলিমরা।
এদিন কলকাতার রাস্তা ফাঁকা ছিল। গতবারের সেই পথের আনন্দ নেই। তবে মসজিদের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বাড়িতে ছোট ছোট ঈদের জামাত হয়েছে। শিশুরাও পরিবারের সঙ্গে ঈদের জামাতে অংশ নেয়। ভোর রাত থেকে নতুন নতুন খাবার তৈরি করেন মায়েরা। এক মাস উপবাস থাকার পর এই প্রথম সকালে খেয়ে ঈদের নমাজ পড়েছে মুসলিমরা। স্নান করে সুগন্ধি, সুরমা মেখে মাথায় টুপি ও পরিস্কার কাপড় পরেছে। এবার যেহেতু ঈদের বাজার করতে পারেনি তাই আগের যথাসম্ভব নতুন পোশাক করেছে। বাইরে না বেরিয়ে অনেককে সামাজিক মাধ্যমে ঘরে ঈদ পালনের ছবি পোস্ট করতে দেখা গেছে।
ইসমাইল জমাদারের মন্তব্য, ‘আমার ছয় বছরের ছেলেটা ঈদের জামাতে যাওয়ার বায়না করেছে। কিন্তু কী করে বোঝাবো যে এ বছরের ঈদ আলুনি, কোনও হৈচৈ নেই!”
আরেকজন বলছেন,অন্যরকম ঈদ। চিরাচরিত কোলাকুলি নেই, মুসাফাহা নেই। সালামির তোড়জোড় নেই। মেহমান নেই। আড্ডার গলিগুলিতে কোনও হই-হুল্লোড় নেই। ঘরবন্দি মানুষ। আহা, এই পৃথিবী একটি রসহীন ঈদ উদযাপন করল।”
তবে ঈদের নামাজের পর সবাই প্রার্থনা করেছে করোনা থেকে মুক্তি লাভের জন্য। কলকাতার মাওলানা সাহার আলি বলেন, আগামীতে যেন সকলে মসজিদে বা ঈদগাহে নমাজ পড়তে পারি তার জন্য আল্লাহর কাছে দুআ(প্রার্থনা) করি। জলে স্থলে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তা মানুষের কৃত কর্মের ফল। আমাদের সংশোধন হতে হবে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
হে আল্লাহ তুমি আমাদের ভারতবর্ষকে করোনা মুক্ত করে দাও, পৃথিবীর মানুষকে রক্ষা কর।”
কলকাতার নাখোদা মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিক কাসেমী জানান, ঈদের দিন সবাই দুআ করেছি যেন আল্লাহ দেশকে করোনা মুক্ত করে দেন। সবাই আগে যেভাবে ছিলাম সেই অবস্থা যেন ফিরিয়ে দেন। আমরা সবার জন্য প্রার্থনা করছি যাতে সকলে সুস্থ থাকে, ভালো থাকে। মানুষের জন্য, দেশের জন্য সবাইকে ত্যাগ করতে হবে। আমরা ভারতবর্ষের মানুষ সেই ত্যাগ দেখাচ্ছি।
ঈদের দিন মসজিদের ইমামরা ফের করোনা জনিত লকডাউনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার কথা বলেন।