অষ্টমীর ভোগে ত্রুটি, বিসর্জনের পরেই ফের মা দুর্গার পুজোর আয়োজন জামুড়িয়ায়

শুভেন্দু বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল: করোনা আবহের মধ্যেই এই বছরের মত দুর্গা পুজো শেষ হয়েছে। বিজয়ার বিষাদের সুর এখনও মানুষের মন থেকে কাটেনি। তারই মধ্যে আবার দুর্গা পুজো শুরু হল আসানসোলের জামুড়িয়ায়। আবার বেজে উঠল ঢাক। মন্ত্রোচারণের মধ্যে দিয়ে গমগম করে উঠল মন্দির চত্বর। প্রথা মেনে আনা হল সপ্তমীর বারি। নবপত্রিকার স্নানের শেষে পাতা হল ঘট। নতুন করে হবে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীর পুজো।
আসানসোলের জামুড়িয়ার মদনতোড় গ্রামের রায় ও মুখোপাধ্যায় পরিবারের পুজোয় খুঁত বা ত্রুটি হয়ে যাওয়ায় নতুন করে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে উমার আবাহন। মঙ্গলবার হয়েছে সপ্তমীর পুজো। বুধবার হলো অষ্টমীর পুজো। আর এমনভাবে নতুন করে পুজোর করার নাকি নির্দেশ দিয়েছেন মা দুর্গা নিজেই। সেটা নাকি পরিবারেরই এক সদস্যের উপর মা ভর করে নির্দেশ দিয়েছেন নিখুঁত ভাবে ত্রুটিমুক্তি পুজো করতে। তাই তেমনটাই শুরু হয়েছে এখানে। ফলে গ্রামের মানুষ আবারও মেতে উঠেছেন পুজোর আনন্দে।
রায় ও মুখোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যদের দাবি, সাড়ে তিনশো বছরের পুরানো তাদের এই পুজো। এখানেই রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন। কথিত আছে, এখানকার মা দুর্গা খুবই জাগ্রত। অতীতে নাকি অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে। তবে দ্বিতীয়বার দুর্গা পুজোর ঘটনা ঘটলো এই প্রথম। পঞ্জিকা মতে, সোমবার ছিল দশমী। সেই মত সেদিন দশমীর পুজো শেষ করে দিনের বেলায় নবপত্রিকা বিসর্জনের পর রাতে প্রতিমা বিসর্জনের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। বিসর্জনের সময় পরিবারের সদস্য রাজু মুখোপাধ্যায় অসুস্থ বোধ করলে বাড়ি ফিরে যায় অন্য এক ভাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু বাড়ি ফেরার রাস্তায় অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে রাজু। সে ভাইকে নির্দেশ দেয় পুকুরের জলে স্নান করে আসার জন্য। এরপরে সে নিজে ছুটে গিয়ে পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে পড়ে।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, সেই সময় নাকি এক অদ্ভুত ক্ষমতার অধিকারি হয়ে উঠেছিল রাজু। তাকে বেদি থেকে নামানো যায়নি। বেদিতে বসেই রাজু বলে, অষ্টমীর পুজোয় নিবেদন হওয়া নৈবদ্য ভোগ ছিল ত্রুটিপূর্ণ। সেই ভোগে পা ঠেকে গেছিল। তাই সেই ভোগ নিবেদন করা হলেও, তা গ্রহণ হয়নি। রাজুই অষ্টমঙ্গলার আগেই ঘট পেতে নতুন করে পুজোর নির্দেশ দেয়। রাজুর সেই নির্দেশ মা দুর্গার আদেশ মনে করে নিয়ে শুরু হয় নতুন করে পুজো।