ডিউটি অফিসার নেই! এই অজুহাতে বৃদ্ধকে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ পর্ণশ্রীতে!
অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: মদ্যপানের প্রতিবাদে সুবিচারের আশায় থানায় গিয়ে এভাবে পুলিশের হেনস্থার শিকার হতে হবে, তা ভাবতে পারেননি পর্ণশ্রীর বাসিন্দা ৮৬ বছরের বৃদ্ধ প্রলয়কান্তি সরকার। রবিবার রাতে প্রায় ঘন্টাখানেক থানায় বসে থাকার পরে পুলিশ জেনারেল ডায়েরি নিলেও আদৌও কোনও কাজ হবে কি না, আশঙ্কায় তার গোটা পরিবার। যদিও কেন তাকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল, তা তিনি নিজেও জানতে পারেননি। তবে যে অফিসার তাকে ডিউটি অফিসার না থাকার কারণ দেখিয়ে বসিয়ে রেখে ছিলেন শেষ পর্যন্ত বড়বাবুর ধমক খেয়ে মামলা লিখলেন সেই ডিউটি অফিসার, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ৩৯৭এ পর্ণশ্রী পল্লির বাসিন্দা ৮৬ বছরের বৃদ্ধ প্রলয়কান্তি সরকার, ৮৩ বছরের বৃদ্ধা ইলা সরকার ও ৫০ বছরের ছেলে প্রবালকান্তি সরকার। অভিযোগ, রবিবার রাতে বাড়ির ঠিক পাশে ঢালাও মদ্যপানের আসর বসেছিল। বার বার বারণ করলেও চিৎকার, চেঁচামেচি, গালিগালাজ আর খিস্তিখেউড়ের রেশ কিছুতেই থামছিল না।
এই ঘটনায় অনেকক্ষণ ধরেই বিব্রত ও অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন বৃদ্ধ দম্পতি। ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি, শরীরে ক্যাথিডার লাগানো অবস্থায় জানলা দিয়ে প্রথমে প্রতিবাদ করেন বাবা প্রলয়কান্তি সরকার। কিন্তু পাল্টা হুমকিতে চুপ করে যান তিনি। এরপরই মা ইলা সরকার ও ছেলে প্রবালকান্তি সরকার প্রতিবাদ করলে শুরু হয়ে যায় একদল মদ্যপের তাণ্ডব। অভিযোগ, তারা তাদের বাড়ির গ্রিলের দরজায় লাথি, ঘুষি মারতে থাকে এবং বাইরে বেরোলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
আতঙ্কিত অসহায় প্রলয়বাবু পর্ণশ্রী থানায় ফোন করলেও কেউ ফোন তোলেননি বলে অভিযোগ। এরপর বাধ্য হয় ১০০ ডায়াল করেন। কিন্তু তাতেও রাতে টহলরত পুলিশ শুধুমাত্র এসে একবার ঘটনাস্থলে ঘুরে যায়। অভিযোগ, তারা এসে ঘুরে যাওয়ার পরেই ফের মদ্যপদের ফের তাণ্ডব শুরু হয়।
উপায়ান্তর না দেখে বাধ্য রাত ১২ টা নাগাদ ছেলের সঙ্গে বাইকে থানায় পৌঁছয় গোটা পরিবার। কিন্তু সেখানে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয় তাদের। শেষে নাইট রাউন্ড শেষে বড়বাবু থানায় ঢুকে এই ঘটনা দেখে ধমক দেন ওই ডিউটি অফিসার কে। তড়িঘড়ি বৃদ্ধকে থানায় ডেকে মামলা লিখে নেন ডিউটি অফিসার। যদি এই ঘটনার পর গোটা একটা দিন কেটে গেলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। কিন্তু কেন তাদের হেনস্থা করা হল আর আদৌ তারা সুবিচার পাবেন কিনা, নাকি ফের ওই মদ্যপদের হুমকির মুখে পড়তে হবে, আশঙ্কায় পর্ণশ্রীর সরকার পরিবার।