ক্যালিফোর্নিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে দাবানল, ৯০ হাজার মানুষকে ঘর ছাড়ার নির্দেশ

লস এঞ্জেলস, (সংবাদ সংস্থা): ক্যালিফোর্নিয়ায় ভয়বাহ দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় ৯০ হাজার ৮০০ জন বাসিন্দাকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। বর্তমানে দাবানল নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৫০০ জন কর্মী কাজ করছেন। তাদের মধ্যে দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
লস এঞ্জেলসের কর্মকর্তারা বলছেন, অরেঞ্জ কাউন্টি ও সান বার্নারদিনোতে দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় অরেঞ্জ কাউন্টির পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডায়মন্ড বারের দক্ষিণ অঞ্চলের বাসিন্দারের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে অরেঞ্জ কাউন্টির ফায়ার সার্ভিসের প্রধান শেন শেরউড বলেন, গত সোমবার বাতাসের তীব্র গতির কারণে দাবানল দ্রুত ক্যালিফোর্নিয়ায় আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একইসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের আধিকারিকরাও জানিয়েছেন, গত সোমবার বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২০ মাইল। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৮ হাজার একর জায়গাজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। পরে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলে আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমান ব্যবহারের পরিকল্পনা করে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। দাবানলের কারণে অরেঞ্জ কাউন্টির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জগদ্দলে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু না খুন? চাপানউতোর রাজনীতিক মহলে
এদিকে হুট করে বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেয়ায় সেখানকার বাসিন্দারা আরও বিপদে পড়েছেন। আরভিন শহরের বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সী চার্লিন স্টিফেনসন বলেন, ‘গত সোমবার যখন বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ আসে তখন তিনি চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় তার মোবাইল ফোনে একটি বার্তা আসে। বাড়ি ফেরার পর এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ও তার ভবনের অন্যান্য বাসিন্দাদের ঘর ছেড়ে চলে যেতে বলেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি চার বছর ধরে আরভিন শহরে বসবাস করছি। আমার স্বামী মারা গেছে কয়েক বছর আগে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি ধোঁয়ার গন্ধ পায়। এটা খুবই ভয়ঙ্কর। আমি আগে কখনও এমন বিপদে পড়িনি।’
সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ায় বিশ্ব রেকর্ড গড়া তাপদাহের মধ্যে ১২ হাজারের বেশি বজ্রপাত থেকে এ দাবানলের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কয়েকশ অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা চলছে সান ফ্রান্সিসকোর দক্ষিণ ও পূর্বের পাহাড়ি এলাকাগুলিতে। দাবানলের ৫৬০টি অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে অন্যতম বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। এদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল মোকাবিলায় ওরেগন, নিউ মেক্সিকো, টেক্সাস থেকে দমকলকর্মী, পর্যবেক্ষণ বিমান ও গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। এরপরও অস্ট্রেলিয়া থেকে ‘বিশ্বসেরা দাবানল মোকাবিলা বাহিনী’ পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন গভর্নর নিউসম।