মানিকচকের গঙ্গার ঘাটের লঞ্চ ডুবির পর এই প্রথম মালদায় স্থায়ী জেটি তৈরি হতে চলেছে

মিল্টন পাল,মালদা: মানিকচকের গঙ্গার ঘাটের লঞ্চ ডুবির ঘটনার পর এই প্রথম মালদায় স্থায়ী জেটি হতে চলেছে একটি। জেটি করার জন্য পরিবহন দফতর থেকে তিন কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করা হবে। জেটি তৈরি করবে সেচ দফতর। এমনটাই জানিয়েছেন মালদা জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র। উল্লেখ্য, মালদা জেলায় একাধিক নদী রয়েছে, যার মধ্যে গঙ্গা হচ্ছে অন্যতম। জেলার বড় বড় ঘাট রয়েছে বেশ কয়েকটি। এর মধ্যে তিনটি ঘাট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ । একটি মানিকচক ঘাট, দ্বিতীয়টি হরিশ্চন্দ্রপুরের গোবরাঘাট এবং তৃতীয়টি বৈষ্ণবনগর পারলালপুর ঘাট। এই তিনটি ঘাটে স্থায়ী জেটি করার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয় রাজ্য সরকারের কাছে। তারমধ্যে পারলালপুর ঘাট এবং মানিকচক ঘাটে স্থায়ী জেটি করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু বেশ কিছু জটিলতা এবং সমস্যার কারণে পারলালপুর ঘাটের স্থায়ী জেটি করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সেচ দফতর।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদার যে তিনটি নদীর ঘাটে স্থায়ী জেটি করার কথা বলা হচ্ছে, এই তিনটি জেটি আন্তঃজেলা এবং ভিন রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। যেমন মানিকচক ঘাটের ওপারে রয়েছে ঝাড়খন্ড রাজ্য। তেমনি গোবরাঘাটের ওপারে রয়েছে বিহার। এছাড়া পারলালপুর ঘাটের ওপারে রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা। পারলালপুর এবং মানিকচক এই দুটি ঘাট গঙ্গা নদী সংলগ্ন ।গোবরা ঘাটটি হচ্ছে ফুলহার নদী সংলগ্ন ।
উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর রাতে মানিকচকের গঙ্গার ঘাটের লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটে । পুরোপুরি লঞ্চটি না ডুবলেও পণ্যবাহী লঞ্চে থাকা ৮টি পণ্য বোঝাই লরি ডুবে যায়। নিখোঁজ হয় তিনজন । পরে দুজনের দেহ উদ্ধার করে এনডিআরএফের দল। এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে জেলা তথা রাজ্য প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, গঙ্গা নদী সংলগ্ন মানিকচক ঘাটে একটি জেটি অনেক আগে হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। যেহেতু ওই এলাকাটি ভাঙ্গন প্রবন এলাকা। সেই কারণে, এতদিন জেটি করার উদ্যোগ নেয় নি জেলা প্রশাসন। তৃণমূল সরকার আসার পরেই পাকাপাকি ভাবে মানিকচক ঘাটে স্থায়ী জেটি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই মানিকচক ঘাট কয়েক দশক পুরনো । ফারাক্কা ব্যারেজ যখন তৈরি হয় নি। তার আগে থেকেই উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল নদীপথ। অর্থাৎ মানিকচক ঘাট দিয়ে যাতায়াত করতে হতো সকলকে। এখনো সেই যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকেই গিয়েছে। নদীর ওপারে রয়েছে ঝাড়খন্ড রাজ্য । এই ঘাট দিয়ে যাত্রী এবং পণ্য বোঝাই গাড়ি চলাচল করে, তার জন্য বড় বড় লঞ্চ রয়েছে ।
জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, স্থায়ী জেটি থাকলে ২৩ নভেম্বর লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটতো না। স্থায়ী জেটি হলে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন, ভাঙ্গন প্রতিরোধের কাজ করার পর মানিকচক ঘাটে খুব শীঘ্রই স্থায়ী জেটির কাজ শুরু হবে।