
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আমফান ও করোনা…রাজ্যে এই দুইয়ের জোড়া ধাক্কায় বিপর্যস্ত কলকাতা পুরসভার ফুল চাষ। একে আমফান ঝড়ের দাপট তার ওপর করোনার সতর্কতামুলক নিষেধাজ্ঞার ফলে পুরসভার ফুল চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সামনেই ফুলের ভরা মরসুম আসতে চলেছে কিন্তু এবার আর পুরসভার উদ্যান গুলিতে ফুলে ভরা নিত্যনতুন গাছ আর দেখা যাবে না। কারণ পর্যাপ্ত ফুলের গাছের চাষ হয়নি তাই ফুল গাছ আসবে কোথা থেকে? এদিকে শহর কলকাতার জন্য চাই পর্যাপ্ত পরিমাণের ফুলের গাছ। আর তাতেই এবার মাথায় হাত উঠেছে পুর কর্তৃপক্ষের। আমফান ঝড়ের দাপটে নষ্ট হয়ে গিয়েছে অনেক চারা গাছ। ফলে ঘোর বর্ষাতেও টগর, জুঁই কামিনী, করবী, বেল-সহ বিভিন্ন ফুলের উৎপাদনে পুরসভার নার্সারিতে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। এমনই দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।
পুরসভার পার্কগুলিতে অন্য বছর এই সব গাছ যত লাগানো হয় এ বার তা হয়নি। তা ছাড়া বেশ কিছু চারাও নষ্ট হয়েছে। অন্য দিকে করোনার সংক্রমণ রুখতে রাজ্য জুড়ে লকডাউনের ফলেও অনেক কম সংখ্যক মালি নার্সারিতে কাজের জন্য যোগ দিতে পেরেছে। ফলে তার জন্যও চাষের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলেন, ‘এ বার বর্ষায় পুরসভার নার্সারিতে ফুলের ঘাটতি হয়েছে। তবে এই সব ফুলগাছ শহরের রাস্তার ধারে বসানো হয় না। রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে সে জন্য বিভিন্ন বরোয় নিম এবং দেবদারু গাছ বিতরণ করা হচ্ছে। সেগুলি বাইরে থেকে আনা হয়েছে।’
উদ্যান দফতরের হিসেব অনুযায়ী, বর্ষায় মরসুমি ফুলের উৎপাদন প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। দফতরের এক আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আমফানে বড় গাছের ডাল পড়ে ছোট ছোট টবে থাকা ফুলগাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া লকডাউনে কর্মী কম আসায় ফুলের চাষে ক্ষতি হয়েছে।’
মূলত উত্তর ও দক্ষিণে কলকাতা পুরসভার মোট দু’টি নার্সারি আছে। এই টালা পার্ক ও উডবার্ন পার্কের দুই নার্সারিতে সারা বছর মরসুমি ফুলের চাষ হয়। ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরেরা তাঁদের ওয়ার্ডের জন্য ওই সব নার্সারি থেকে চারা নিয়ে থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও পুর নার্সারি থেকে বিভিন্ন ফুলের চারা নেন।
পুর কর্তৃপক্ষ আরও জানান, শহর জুড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বড় গাছের চারাগুলিকে বাইরে থেকে আনাতে হয়। ওই সব চারা নার্সারিতে তৈরি করা যায় না। মূলত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং কর্পোরেট সংস্থা পথের ধারে বসানোর জন্য নিম এবং দেবদারুর মতো চারা দিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে সফল করতে পুরসভার পাশে এগিয়ে এসেছে।