
যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্ক: ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আপাতত স্থগিত রাষ্ট্রদোহ আইন। যতক্ষণ না-পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট এই আইন পুনরায় বিবেচনা এবং আইনের সুযোগ-সুবিধা পুনরায় পরীক্ষা করছে, ততদিন রাষ্ট্রদ্রোহ আইন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে। বুধবার এমনটাই নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রাষ্ট্রদোহ আইনে মামলা রুজু থাকলেও নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না কেন্দ্র ও রাজ্য। জেলবন্দিরাও জামিনের আবেদন করতে পারবে।
এই আইনে বকেয়া বিচার, আবেদন, ১২৪এ ধারায় আইনি কার্যকলাপ- সব স্থগিত করে দিয়েছে। প্রথমে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পক্ষে সওয়াল করলেও পরে সুপ্রিম কোর্ট এই আইন পুনর্বিবেচনা করতে রাজি হয়েছে।
১২৪এ ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহ হল- ‘ কেউ শব্দ, কথ্য অথবা লিখিত, অথবা স্বাক্ষরের দ্বারা, অথবা দৃশ্যমান প্রতিনিধিত্ব, অথবা অন্যভাবে, ঘৃণা বা অবজ্ঞা ছড়ায় বা ছড়ানোর চেষ্টা করে, উত্তেজিত করে, অথবা উত্তেজনাকে অসন্তোষে বদলানোর চেষ্টা করে, সরকার তাকে আইন অনুযায়ী আজীবন কারাবাস, সঙ্গে জরিমানাও করতে পারে।’
ভারতীয় দণ্ডবিধির খসড়া প্রণয়নকারী টমাস ম্যাকোলে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনটি দণ্ডবিধিতে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। তবে এটি ১৮৬০ সালে ম্যাকোলের তৈরি দণ্ডবিধিতে যুক্ত হয়নি। কোনও কারণে বাদ পড়ে গিয়েছিল। তার ৩০ বছর পর, ১৮৯০ সালে ১৭তম বিশেষ আইনের মাধ্যমে ১২৪এ ধারাকে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এই আইনের বিষয়বস্ত ছিল রাষ্ট্রদ্রোহ। সেই সময় এর শাস্তি বলতে ছিল আজীবনের জন্য দীপান্তর। ১৯৫৫ সালে সেই শাস্তিকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বদলানো হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহে যেই ব্যক্তি দোষী, তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহী বা দেশদ্রোহী বলা হয়ে থাকে। অনেক দেশেই রাষ্ট্রদ্রোহের শাস্তি হিসেবে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তির নিদান দেওয়া রয়েছে। এমনকী অনেক দেশে রাষ্ট্রদ্রোহীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার চল রয়েছে।