“আমি অরূপ বিশ্বাসের ‘ভাইপো’,তোমার সঙ্গেও ‘এনজয়’ করতে পারি” মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে উঠতি মডেলদের কুপ্রস্তাব, গ্রেফতার যুবক

অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা: মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে তোলাবাজির অভিযোগ হামেশাই ওঠে। এবার রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ‘ভাইপো’ পরিচয়ে টলিউডে মহিলা মডেলদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার টোপ ও ভয় দেখিয়ে তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হল এক যুবক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন খোদ মন্ত্রী নিজেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিভিন্ন উঠতি মডেলকে মন্ত্রীর ভাই স্বরূপ বিশ্বাসের ছেলে বলে দাবি করত সে।
প্রতারণা করতে গিয়ে এক উঠতি মডেলকে সে বলে বসে, সে একাধিক মডেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছে। তার পিছনে মন্ত্রীর হাত ও টাকার জোর রয়েছে। ওই অভিনেত্রী-মডেল ওই প্রতারক যুবকের ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করতেই তা মন্ত্রীর নজরে আসে। তারপরই স্বয়ং মন্ত্রী এফআইআর দায়ের করেন রিজেন্ট পার্ক থানায়। তারপরই সোমবার রাতে ওই এলাকা থেকে রণজিৎ বিশ্বাস ওরফে আকাশ নামে যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, টলিউডের কয়েকজন কলাকুশলী ও ফটোগ্রাফারের সঙ্গে পরিচয় ছিল রিজেন্ট পার্কের ২৭ বাবুরাম ঘোষ রোডের রণজিতের। অভিনয় ও মডেলিংয়ে ইচ্ছুক মেয়েদের প্রলোভিত করতে বিভিন্ন নামে ফেসবুকে আটটি অ্যাকাউন্ট খুলেছিল রণজিৎ। ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতায় এসে মডেলিংয়ে কাজ শুরু করা এমনই এক মডেল কাম অভিনেত্রীর সঙ্গে কিছুদিন আগে ফেসবুকে আকাশ বিশ্বাসের পরিচয় হয়। কাজ পাইয়ে দেবে বলে তাঁর কাছে ১০ হাজার টাকা চায় আকাশ ওরফে রণজিৎ। ওই মডেল তাকে সেই টাকা দিয়েও দেন। কিন্তু টাকা ফেরত চাইতেই সে অন্যরকম ব্যবহার শুরু করে।
হোয়াটসঅ্যাপে তিনটি মেয়ের নানা মডেলিংয়ের ছবি দিয়ে তাঁর সঙ্গে শারীরিক ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দেয়। তারপর বলে, “এই তিনটি মেয়ে কাজের আগেই ব্যক্তিগতভাবে আমার ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। তারপরেই এরা কাজ পেয়েছে। চাইলে জেদ করলেই সে এমন অনেক ‘এনজয়’ করতে পারে বলেও অশালীন ভাষায় হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে সে জানায়। ওই অভিনেত্রীকে মেসেজে সে বলে, “আমি তো চাইলে তোমার সঙ্গেও এনজয় করতে পারি।”
ওই তরুণী তার অসম্মতি জানাতেই তখনই রণজিৎ ওরফে আকাশ ধমক দিয়ে ভয় দেখিয়ে বলে,“ক্ষমতা থাকলে টালিগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রিতে পা দিয়ে দেখাও। এই ইন্ট্রাস্ট্রির সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস আমার বাবা। টালিগঞ্জের বিধায়ক, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আমার কাকু।” এরপর ওই অভিনেত্রী প্রতারক আকাশের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে কথাবার্তার স্ক্রিন-শট ও ছবি দিয়ে ফেসবুকে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট করে দেন। তারপরে মন্ত্রীর নজরে পড়লে তিনি তার পরিবারের সুনাম নষ্ট হওয়ার অভিযোগ করেন ওই যুবকের বিরুদ্ধে। এরপরেই অভিযুক্তকে পাকড়াও করে পুলিশ। সে আর কার কার সঙ্গে এরকম প্রতারণা করেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।