fbpx
পশ্চিমবঙ্গহেডলাইন

ফালাকাটা থেকে আসামের গোসাইগাও পাঁয়ে হেটে রওনা দিলেন এক মা!

হিতৈষী দেবনাথ, আলিপুরদুয়ার: লকডাউনের পূর্বে ১০ মাসের শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে সেই সঙ্গে ২ ভাইয়ের সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা এলাকায় দিদির বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন আসামের গোসাইগাও এলাকার বাসিন্দা মলিনা হেমব্রম। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় আর বাড়ি ফিরতে পারেননি তিনি। ১০ মাসের সদ‍্যোজাত পা রেখেছে বছরের ঘরে। দিদির আর্থিক অবস্থাও দিন এনে দিন খাওয়া পরিবারের যেমনটা থাকার কথা ঠিক তেমনটাই। দিদির বাড়িতে থাকতে থাকতে হাতের সমস্ত টাকাই শেষ হয়ে যায় মলিনা দেবীর। তার পাশাপাশি দিদির পরিবারেও আর্থিক অনটন থাকায় প্রতিনিয়ত সেখানেও অশান্তি বেড়ে চলেছিল।

শেষে মঙ্গলবার মলিনা দেবী হেটেই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেইমতো সকাল থেকেই কোলের সন্তান এবং ভাইয়ের সন্তানদের নিয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে হাটতে হাটতে আলিপুরদুয়ার ২ নং ব্লকের ভেলুরডাবরী এলাকায় পৌঁছান মঙ্গলবার বিকেলে। হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে বসে পড়েন ভেলুরডাবরী এলাকার রাজ‍্যসড়কে। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় বাসিন্দা এবং সংবাদ শ্রমিকদের। তারপর বাসিন্দারা এবং সংবাদ শ্রমিকরা সরকারি বাস দাড় করিয়ে আসাম বাংলা সিমান্তের বারোবিশা পর্যন্ত ঐ মহিলা সমেত শিশুদের পৌছে দেওয়ার ব‍্যবস্থা করেন। সেই সঙ্গে তাদের দেওেয়া হয় কিছু শুকনো খাবার।

আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারে একই পরিবারের ৩ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু, চাঞ্চল্য

এতো গেলো শুধুমাত্র একজন মায়ের গল্প। গোটা আলিপুরদুয়ার জেলাতে প্রতিদিনই এভাবেই অনেক বেদনাদায়ক দৃশ্য চোখে ভেসে উঠছে। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা রাজ‍্য তথা দেশে এমন দৃশ্য প্রতিদিনই চলছে তা হলফ করে বলাই যায়। দেশ আজ লড়ছে করোনার বিরুদ্ধে, যা আর কিছু না হলেও ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু এই অসহায় মায়েদের কঠিন লড়াইগুলো আদৌ ইতিহাসে স্থান কতটা স্থান পাবে, কথা বলবে ভবিষ্যৎ!

Related Articles

Back to top button
Close