বাংলায় বিনিয়োগের হিসাব চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যপালের

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত পাঁচটি বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যে মোট ১২ লক্ষ ৩২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। এরমধ্যে ৫ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই তথ্য নবান্নের। এবার সেই বিনিয়োগের হিসাব চাইল রাজভবন। মঙ্গলবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানতে চাইলেন, ২০১৫ থেকে যে বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে তাতে প্রাপ্তি কী হয়েছে , নবান্ন বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে দিয়ে জানাক।
প্রসঙ্গত গুজরাতের ধাঁচে প্রতি বছর এ রাজ্যেও বাণিজ্য সম্মেলন হয় বেশ ঘটা করে। আর প্রতিবারই অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র সম্মেলন শেষে বিনিয়োগের প্রস্তাবের আকর্ষণীয় তথ্য দেন। সম্প্রতি রাজ্যপাল এবিষয়ে নবান্নের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন, কিন্তু উত্তর পাননি।
শেষমেষ এদিন রাজ্যপাল চিঠিই লিখে ফেললেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কী লিখলেন চিঠিতে? রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘ আপনি সম্প্রতি বলেছেন, আমাদের সরকার সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে, আর্থিক অনুমোদন নিয়ে কাজ করা হয় এবং নিয়মিত অডিট হয়।’ রাজ্যপাল এরপর ২০১৫ থেকে সরকার ঘোষিত বিনিয়োগের প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে প্রতিবার বাণিজ্য সম্মেলনের পর রাজ্য সরকার ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে বলে দাবি করেছে।
এছাড়াও রাজ্যপাল রাজ্য বিধানসভায় প্রাক্তন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর ভাষণের উল্লেখ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, ‘ বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটের পঞ্চম সংস্করণ অতিশয় সফল হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। তারমধ্যে ৫০ শতাংশ বাস্তবায়নের কাজ চলছে।’
এরপরই রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘ গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসের পর দেড় বছর অতিক্রান্ত। শুধু বিবৃতি আর বিজ্ঞাপন দিয়ে দুনিয়া চলে না। কাজের কাজ কী হয়েছে স্বচ্ছতার সঙ্গে জানান। ‘ গত ৬ আগস্ট অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লিখে যে বিষয়গুলির ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন তাও ছুঁয়েছেন এদিনের চিঠিতে।যে বিষযগুলো জানতে চেয়েছেন সেগুলো হলো-(এক) প্রথম বছর থেকে বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজনের জন্য কতো টাকা খরচ করা হয়েছে। (দুই ) যে এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজনের করা হয় তাদের নাম কি? ( তিন) যে ইভেন্ট কোম্পানি গুলো বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজন করেছিল তাদের ই বা নাম কি? ( চার) বাণিজ্য সম্মেলন শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কত মৌচুক্তি হয়েছে এবং কতো কর্মসংস্থান সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। (পাঁচ) বাস্তবে কতো বিনিয়োগ হয়েছে আর কতো কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।
রাজ্যপালের এই চিঠির জবাব নবান্ন দেয় কি না নজর থাকবে সেদিকেই। রাজ্যপাল যে প্রশ্নগুলো তুলেছেন তাতে কোনও পক্ষ রাজনীতির গন্ধ পেতে পারেন, কিন্তু প্রশ্নগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, দাবি বিশেষজ্ঞমহলের।