মহিলাকে খুনের ঘটনার যাব্বজীবন সাজা ঘোষণা করলো হলদিয়া আদালত

মিলন পণ্ডা, পূর্ব মেদিনীপুর (হলদিয়া): মহিলাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন ও সোনার গয়না ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করলো হলদিয়া মহাকুমা আদালত। এনিয়ে গত ১৫ দিনে মধ্যেই আদালতের বিচারক পরপর তিনটি সাজা ঘোষণা করলেন। মঙ্গলবার হলদিয়া আদালতের বিচারক অভিযুক্তকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৭৯ ধারায় দোষী সাবস্ত করেন। বুধবার হলদিয়া মহকুমা আদালতের ফাস্টট্রাক কোর্টের বিচারক অনিল কুমার প্রসাদ অভিযুক্ত প্রবীর কুমার গুমাইকে ৩০২ নং ধারায় যাব্বজীবন সম্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন এবং ৩৭৯ নং ধারায় তিন বছর সম্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের জেল হাজতের নির্দেশ দেন। এই মামলা সরকারি আইনজীবী ছিলেন দিলীপ কুমার শী।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে,পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল থানার কাউকুণ্ডু গ্রামের ২০০৯ সালের ২৪ শে মার্চ সন্ধ্যায় প্রতিবেশী শশাঙ্কশেখর মাইতির বাড়িতে টিভি দেখতে যান প্রতিবেশী মহিলা আঙ্গুরবালা জানা। এরপর রাত্রি নটা নাগাদ বাড়ি ফেরার জন্য রওনা দেয় আঙ্গুরবালা দেবী। রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় প্রতিবেশী প্রবীর কুমার গুমাই। এরপর মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে খড়ি জঙ্গলে ফেলে দেয়। মহিলার সোনার দুল খুলে নেয় ওই যুবক। গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফিরলে পরিবারের লোকেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করলে কোথাও সন্ধান পাননি। ২৬ শে মার্চ সকালে খড়ি জঙ্গল থেকে আঙ্গুরবালা জানা (৫৫) মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। তারপরে মৃতার ছেলে বিশ্বনাথ জানা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মহিষাদল থানার পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৭৯ ধারা মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের শূন্যপদে আবেদনের সুযোগ পেলেন ট্রান্সজেন্ডাররা
মামলায় সরকারি আইনজীবী দিলীপ কুমার শী বলেন প্রতিবেশী থেকে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলেও অভিযুক্ত প্রবীর ঘটনাস্থলে আসেনি।এনিয়ে গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের কথা স্বীকার করে প্রবীর। মহিলার কানে থাকা সোনার দুল কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল ওই যুবক। তিনি আরও বলেন এই মামলায় ১২ জন সাক্ষী গ্রহণ করেন বিচারক। গ্রেফতার পর কয়েক মাস জেলে থাকার পর শর্তসাপেক্ষে জামিন পায় অভিযুক্ত। আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অপরাধে ২০১৫ সালে আবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্ত জেলেই রয়েছে। মহিলার ছেলে সঙ্গে প্রবীর প্রায়ই বসেই মদ্যপান করতো। এনিয়ে প্রবীরকে বকাবকি করেছিল আঙ্গুর বালাদেবী।