
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: ৪৮ ঘণ্টা পরে হাথরাসে ঢোকার অনুমতি সংবাদমাধ্যমকে। লাগাতার সমালোচনা, বিক্ষোভের পরে অবশেষে খুলে দেওয়া হল হাথরসের সীমান্ত। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, গ্রামের ভিতরে যেতে পারবে সংবাদমাধ্যম। তবে এখনই কোনও রাজনৈতিক নেতাকে গ্রামের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না বলেই জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। হাথরসের জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট প্রেম প্রকাশ মীনা জানিয়েছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে তার জন্যই এই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আজ থেকে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা গ্রামের ভিতরে যেতে পারেন। তবে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি বা নেতাকে ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।’
গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরসের এক দলিত তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে উচ্চবর্ণের চারজনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার মৃত্যু হয় বছর ২০-র ওই তরুণীর। তারপরেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে দেহ পরিবারের হাতে তুলে না দিয়ে জোর করে তা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনা নিয়েই উত্তাল দেশ। অবশ্য অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নির্যাতিতার পরিবারের ন্যায় বিচারের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল গোটা দেশ। গত বৃহস্পতিবার হাথরসে যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার করা হয় কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী ও সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে। তাঁদের জোর করে দিল্লি ফিরিয়ে আনা হয়। শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল সেখানে গেলে তাঁদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। শনিবার ফের হাথরসে যাবেন বলে জানিয়েছেন রাহুল গান্ধী। সঙ্গে যাবেন কংগ্রেসের বাকি সাংসদরা। যেতে পারেন অখিলেশ যাদবও।
এদিকে ঘটনার পর থেকে গ্রামের বাইরে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। শুধু গ্রামের বাইরেই নয়, নির্যাতিতার বাড়ির বাইরেও মোতায়েন করা হয় পুলিশ। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, তাঁদের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বয়ান বদলের জন্য তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমকেও গ্রামের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। এই বিষয়ে সরব হয় বিরোধী দল কংগ্রেসও। উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, ‘যোগীজি গ্রামের মধ্যে সংবাদমাধ্যমের ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, কারণ সংবাদমাধ্যম কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোটা দেশের সামনে তুলে ধরতে পারত। তাঁরা যোগীজির জঙ্গল রাজের ছবি সবাইকে দেখিয়ে দিতে পারতেন। তাই সংবাদমাধ্যমের ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়ল
শনিবার বিজেপি নেত্রী উমা ভারতীও যোগী আদিত্যনাথ সরকার ও পুলিশের সমালোচনা করে বলেন, এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকার ও বিজেপির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীদের গ্রামের ভিতরে ঢুকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া উচিত প্রশাসনের। এই দাবির কয়েক ঘণ্টা পরে সংবাদমাধ্যমের জন্য দরজা খুলে গেল গ্রামের। তবে রাজনৈতিক নেতাদের এখনই গ্রামে ঢুকতে দেবে না যোগী সরকার।