ষষ্ঠীর সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার, পুজোয় বৃষ্টিতে ভাসবে কলকাতা-সহ বহু জেলা, বইবে ঝোড়ো হাওয়া

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: সুদূর কৈলাশ থেকে ঘরে এসেছে ‘উমা’। কিন্তু আনন্দের মাঝেই ষষ্ঠীর দিনেই মনখারাপের খবর। করোনা মহামারি আবহের মধ্যে এবার দুর্গাপুজোর জৌলুস অনেকটাই কমে গিয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের পর মনে করা হচ্ছে মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে প্রতিমা দেখার ভিড় কার্যত থাকবে না। তারই মধ্যে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সবের আমেজে আরও জল ঢালতে প্রস্তুত বরুণদেব। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছিল, অকাল বর্ষণে ভাসবে গোটা পুজো। সেইমতো মা দুর্গার বোধনের দিন ষষ্ঠীর সকাল থেকেই শহর তথা রাজ্যজুড়ে আকাশের মুখ ভার।
নিম্নচাপ আরও শক্তি বাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের কাছাকাছি আসছে। অভিমুখ বাংলাদেশ। মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপের অভিমুখ ছিল অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল। কিন্তু স্থলভাগে না ঢুকে সেটি অভিমুখ পরিবর্তন করে আরও শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এবার এটি ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে বাংলাদেশের দিকে এগোবে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের কাছাকাছি এসে এটি অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এর ফলে সমুদ্র উত্তাল হবে। বইবে ঝোড়ো হাওয়া।
যার জেরে সপ্তমীতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। হালকা ঝোড়ো হাওয়ায় লণ্ডভণ্ড হতে পারে মণ্ডপ। আজ থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩৭ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে। ফলে পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। শুক্র ও শনিবার ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে কলকাতা, হাওড়া ও হুগলিতে। সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এর প্রভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তন রাজ্যে। শনিবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। এই ঝড়বৃষ্টির ফলে কলকাতা সহ হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বেশ কিছু জায়গায জলমগ্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা। আশঙ্কা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় শস্যের ক্ষতিও হতে পারে দুর্যোগের ধাক্কায়।
আরও পড়ুন: আজ মহাষষ্ঠী, একাধিক পুজো উদ্বোধনের কর্মসূচী নিয়ে পথে সাংসদ জগন্নাথ সরকার
২৪ অক্টোবর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামী শুক্র ও শনিবার সুন্দরবনের ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। পর্যটকদের জন্য রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শনিবার পর্যন্ত দিঘা, মন্দারমণি, বকখালি প্রভৃতি অঞ্চলে সমুদ্রের ধারে যেতে নিষেধ করা হয়েছে সবাইকে। এদিকে মহামারীর মরশুমে আর বিপর্যয় ছড়াক তা চায় না প্রশাসন। একেই দুর্গাপুজো তায় যদি ঝড়বৃষ্টি শুরু হয় তাহলে বিপর্যয় বাড়তে পারে। তাই আগেভাগেই উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ ও পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘাতে পৌঁছে গিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বিপর্যয় রুখতে যাবতীয় বন্দোবস্ত করে রাখা হয়েছে। প্রতিটি জেলার জেলাশাসকদের কাছে রাজ্য প্রশাসনের তরফে নির্দেশিকা গিয়েছে যে পুজো উদ্যোক্তাদের আগের থেকে সতর্ক করুন যাতে তাঁরা মণ্ডপের ক্ষতি রুখতে আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে পারেন। অন্যদিকে তবে উত্তরবঙ্গে আপাতত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার-সহ বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।