আরজিকর শিশু নিখোঁজ কাণ্ডে বিশেষ তদন্তকারী দলকে দ্রুত নিরপেক্ষ রিপোর্ট পেশের নির্দেশ হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাতের নিখোঁজ কাণ্ডে বিপাকে কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল আরজিকর মেডিকেল কলেজ। গত তিনমাস আগে সদ্যোজাত শিশু নিখোঁজের ঘটনায় এবার সিআইডির ডিআইজি প্রণব কুমার এবং এনআরএস হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৌরভ চট্টোপাধ্যায় নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
গোটা বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্ত করে, তদন্তকারী এই বিশেষ দলকে রিপোর্ট পেশ করতে হবে হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১০ নভেম্বর।
মামলাকারীর আইনজীবী ব্রজেশ ঝাঁ ও তরুণজ্যোতি তেওয়ারি জানান, হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ওই সদ্যোজাতের পরিবর্তে যে শিশুটির মৃতদেহ দেখানো হয়, তার ডিএনএ টেস্টের জন্য গত ৭ জুলাই নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু ডিএনএ টেস্টে ওই মৃত শিশুর সঙ্গে নিখোঁজ শিশুর বাবা-মায়ের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট মেলেনি। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সদ্যোজাত বদলের অভিযোগে এখন কাঠগড়ায় আরজিকর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনা প্রসঙ্গে আইনজীবীরা জানান, ‘গত ১২ জুন চন্দননগরে জন্ম হয় চন্দননগরের বাসিন্দা দেবযানী মণ্ডল ও বাবুন মণ্ডলের সদ্যোজাত শিশুটির। শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় গত ১৩ জুন তাকে আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শিশুটিকে ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়। ভর্তির পর থেকেই মা ও বাবাকে দেখতে দেওয়া নিষেধ ছিল। এর মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শে বেশ কয়েকবার বাচ্চাটির মায়ের দুধ সংগ্রহ করা হয়।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, লকডাউনের মধ্যে রোজ চন্দননগর থেকে হাসপাতালে এসে সন্তানের জন্য স্তন্যদুগ্ধ দিয়ে গিয়েছেন মৃত শিশুটির মা। তবে বেশ কয়েকদিন ওই সদ্যোজাত শিশুকে আর দেখা করতে না দেওয়ায় ব্যাপারটি সন্দেহজনক মনে হলে বাচ্চাটির বাবা জোর করে ওই বিভাগে ঢোকেন। বাচ্চাদের সজ্জার কাছে গিয়ে দেখেন সেখানে তার সন্তান নেই।
২৫ জুন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, গত ১৫ জুন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ২৬ জুন মর্গে বাবাকে নিয়ে গিয়ে শিশুকে চিহ্নিত করতে বলা হয়। কিন্তু বাবা মর্গে গিয়ে শিশুর পচা,গলা মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেন। তিনি পোস্টমর্টেম ও ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানান। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ১৫ জুন মারা গেলেও কেন ২৫ জুন বলা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তবে কার জন্য মায়ের দুধ সংগ্রহ করা হল ? আর এতো দিন জানানো হল না কেনো তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিশুর পরিবার। এমনকী মৃত অবস্থায় যে সদ্যোজাতকে তাঁদের দেখানো হয়েছিল, সেই দেহটি বিকৃত ছিল বলে তাদের দাবি।