নদিয়ার রেশন দুর্নীতি মামলার রিপোর্টে অসন্তুষ্ট হাইকোর্ট, জেলাশাসককে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় নদিয়ায় জেলা শাসকের রিপোর্টে অসন্তুষ্ট কলকাতা হাইকোর্ট। বেআইনি কাজের মদত দেওয়ায়, আদালত অবমাননার অভিযোগে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে, আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে, জেলাশাসককে আগামী ১৪ ডিসেম্বর দুপুর ১২ টা ১৫’য় সশরীরে হাজিরা দিতে হবে আদালতে।
মামলাকারীর আইনজীবীরা জানান, নদিয়ার শান্তিপুর থানা গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা মামিবুল হঠাৎ জানতে পারে তার প্রয়াত বাবার নামে স্থানীয় রেশন ডিলার খাদ্যশস্য তুলছেন। খোঁজ করে জানতে পারেন গ্রামের এমন আরও অনেকে যারা মারা গিয়েছেন তাদের নামেও খাদ্যশস্য তোলা হচ্ছে।
ওই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ওঠে, করোনা সংক্রমণের এই কঠিন সময়ে সরকার যখন সবাইকে রেশন দেওয়া নিশ্চিত করতে বলেছে তখনও ঠিকমত খাদ্য সামগ্রী দেয়নি রেশন ডিলার। এমনকী বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম করা হয়েছে বলে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের সঙ্গে মামিবুল রেশন দোকানে চড়াও হলেও ডিলারের হেফাজতে থাকা ৩ হাজার ৮০০ কার্ডের মধ্যে ৭৩ টি এমন রেশন কার্ড পাওয়া যায় যারা অনেকদিন আগেই মারা গিয়েছেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলেও তা নিতে অস্বীকার করে পুলিশ। তাই বাধ্য হয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
আইনজীবীরা আরও জানান, গত শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ জেলাশাসকের রিপোর্ট পেশ করতে বলেছিলেন। জেলাশাসক রিপোর্টে যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করলেও মামলাকারীর যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যে বলে অভিহিত করেন। এবং ওই রেশন ডিলার নির্দোষ বলে জানান। যা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে, ‘আদালত আপনার কাছে তথ্য চেয়েছে। অভিমত নয়। সেটা আদালতের কাজ। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা শাসককে দ্বিতীয় বার তথ্য ভিত্তিক রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত’।
সেই রিপোর্ট দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘রাজনৈতিক মোদক বন্ধ হওয়া উচিত। সব কিছুই রাজনৈতিক মদতপুষ্ট হয়ে চলেছে। জেলাশাসক যে রাজনৈতিক মদতপুষ্ট হয়ে আদালতকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে মিথ্যে রিপোর্ট দিয়েছিল দ্বিতীয় রিপোর্টে তা স্পষ্ট’।