শয়ে শয়ে ট্রাক, বুলডোজার নিয়ে এগিয়ে আসছে চিন, স্যাটেলাইটে ধরা পড়ল যুদ্ধের প্রস্তুতি

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: লাদাখে ভারত-চিন সীমান্ত নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সংঘাত চলছে। এর মধ্যেই কয়েকদিন আগে চিনা সেনার হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। সীমান্তের কাছে বড়সড় সামরিক প্রস্তুতি চলছে চিনের। গত ৯ জুন সীমান্তের কাছে গালওয়ান উপত্যকার যে ছবি স্যাটেলাইটে ধরা পড়েছিল, তার থেকে ১৬ জুনের ছবি অনেকটাই আলাদা। শয়ে শয়ে ট্রাক, বুলডোজার, চার চাকার গাড়ি ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে ক্রমশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এগিয়ে আসছে চিন। এমনটাই ছবি ধরা পড়ল স্যাটেলাইটে।
গালওয়ান নদীর গতিপথে বুলডোজার দাঁড়ি করিয়ে দিয়েছে চিন। উপগ্রহ চিত্রে সেটাও ধরা পড়েছে। যার কারণে উপত্যকা বরাবর নদীর প্রবাহ বাধা পেয়েছে। উপগ্রহ চিত্র দেখে মনে করা হচ্ছে, এলএসির পেট্রল পয়েন্ট ১৪-র কাছেই দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সংঘাত হয়েছিল। এলএসি ঘেঁষা ওই রাস্তা দারফুক, শিয়ক ছুঁয়ে চিন নির্মিত কারাকোরাম পাসের কাছে শেষ হয়েছে। সংঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে।
আরও পড়ুন: ভারত-চিন দ্বন্দ্বের মধ্যেই এবার চিনের দিকে মিসাইল তাক করল জাপান
আরও একটা জিনিস ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। সেটা হল, এলএসি বরাবর গালওয়ান নদীর যে গতিপথ সেখানেই নতুন করে কোনও কাঠামো গড়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ৯ জুনের উপগ্রহ চিত্রে নদী উপত্যকায় তেমন কোনও কাঠামো দেখা যায়নি। তবে ১৬ জুনের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, নদী উপত্যকা বরাবর এলএসি থেকে ৬০০ মিটারের মধ্যে নতুন করে কোনও কাঠামো তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্যাম্প করে সামরিক প্রস্তুতি চালাচ্ছে চিন। ভারত সীমান্ত থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পুরোদস্তুর বিমানঘাঁটিও গড়ে তুলেছে। লাদাখের প্যাংগং লেকের ২০০ কিলোমিটার দূরে তিব্বতের ‘গাড়ি কুনসা’য় দশ বছর আগেই একটি বিমানবন্দর বানিয়েছিল চিন। বেজিং তখন জানিয়েছিল, অসামরিক বিমান পরিবহণের জন্যই ওই বিমানবন্দর তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, গত এক মাসে ওই বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ রাতারাতি বেড়ে গেছে এবং সেখানে রীতিমতো একটি বিমানঘাঁটি তথা এয়ারবেস বানিয়ে ফেলেছে চিন।
লাদাখে চিন-ভারত সীমান্ত যাকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বলা হয়, তার সঠিক কোনও সীমারেখা চিহ্নিত করা যায়নি। কারণ চিনা সেনা যে এলাকাকে নিজের বলে দাবি করে, ভারত তা করে না। আবার ভারতীয় বাহিনী যতদূর অবধি এলাকাকে নিজেদের বলে, চিন সেটা নস্যাৎ করে দেয়। ম্যাপ দেখলে বোঝা যাবে, আকসাই চিন পেরিয়ে লাদাখের উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে শিয়ক নদীতে মিশেছে গালওয়ান নদী। এই গতিপথের মধ্যেই ধরা হয় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে। পূর্ব লাদাখের এই গালওয়ান উপত্যকাই চিন-ভারত সংঘাতের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।