পুজোর আবহে বৃদ্ধাশ্রমের মানুষগুলির পাশে “ইচ্ছাশক্তি ফাউন্ডেশন”

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালটা অন্য বছরের মতো নতুনের বার্তা দিয়ে শুরু হলেও, মার্চ থেকেই তার স্বভাব বড্ড বেয়াড়া। করোনা জুজু মানুষকে বহুদিন গৃহবন্দী করে রাখল। তবে একরকমভাবে মানুষও আজও নিয়মের বেড়াজালে বন্দি। বলা যায়, এই মুহূর্তে সকলের গণ্ডি যেন নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ। করোনা কাঁটা আমাদের চারিদিকে ছেয়ে আছে।
তবু সময়ের নিয়মে মা উমা ফিরে আসেন তার বাপের বাড়িতে। আনন্দ করতে মন চায় প্রাণ। কিন্তু প্রতিবারই আমাদের সমাজের কিছু উমা মা উৎসব পালনে বঞ্চিত হন। কারণ তারা সর্বহারা বঞ্চিতের দলে, সমাজের চোখে বাড়তির খাতায় নাম লিখিয়েছেন। সেই বৃদ্ধাদের কথা বলছি, যারা বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন। যাদের নিজের সন্তান, আত্মীয়রা বাতিল করেছেন।
সম্প্রতি এই সমস্ত কথা মাথায় রেখে গত ১৮ অক্টোবর রবিবার “ইচ্ছাশক্তি ফাউন্ডেশন” এর সদস্যরা হাজির হন বৃদ্ধাশ্রমে। সংগঠনের সদস্যের কথায় “সুলতানপুর সংগতি সমিতি বৃদ্ধাশ্রম’’ এর কর্ণধার সবার প্রিয় “লিলি দি”, যিনি একক প্রচেষ্টায় ১৯৮৮ সাল থেকে এই বৃদ্ধাশ্রম চালাচ্ছেন। ২০জন বৃদ্ধার পরিচর্যা করার পাশাপাশি সব কিছুই সুন্দরভাবে সামলান লিলি দি। তবে আজ তাঁর বয়স হয়েছে। তবে মনের দিক দিয়ে অনেকের থেকে বেশি সক্ষম হলেও বর্তমানে বয়েসের ভারে ন্যুব্জ। সমস্ত কাজ তিনি আর পেরে ওঠেন না। সেই চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরেই এই বৃদ্ধাশ্রমটিকে আপন ও নিজের কাজ করে চলেছেন তিনি। তবে লিলিদির আক্ষেপ কোনও আয় নেই, শুধুই ব্যয়। তবু মনের তাগিদে নিজ খরচে এই কাজ করে চলেছেন।
সংগঠনের সদস্যদের কথায়, করোনা আবহে সমস্ত সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে, বৃদ্ধা মানুষগুলি মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফোটাতে ইচ্ছাশক্তি ফাউন্ডেশন পক্ষ থেকে তাদের হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে তাদের জন্য ছিল ফল, শুকনো খাবার, আর অতি প্রয়োজনীয় স্যানিটাইজার ও মাস্ক। জিনিসগুলো হাতে তুলে দিতেই সকলের মুখে হাসি দেখাই এই পুজোতে সব থেকে বড় দামি উপহার বলে মনে হল।
এদিনের কাজে সংগঠনের সদস্যদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন অমিতাভ দাশগুপ্ত, সুব্রত ব্যানার্জি, চৈতালী রয়, সাল্লু খান, পিয়ালী নস্কর, সুমনা মিদ্যা, মনিয়ুর রহমান, পিয়ালী কুন্ডু।