fbpx
আন্তর্জাতিকগুরুত্বপূর্ণবাংলাদেশহেডলাইন

বাংলাদেশে হিন্দুদের ‘ইন্ডিয়ার চর’ ও ‘র এজেন্ট’ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে: হিন্দু মহাজোট

যুগশঙ্খ প্রতিবেদন, ঢাকা: বর্তমানে বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। হিন্দুদের দেশদ্রোহী, ইন্ডিয়ার চর ও র-এর এজেন্ট-ইত্যাদি মিথ্যা উস্কানীমুলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
শুক্রবার ঢাকায় এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভে এ অভিযোগ করেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। এছাড়াও এদিন বাংলাদেশজুড়ে হিন্দু মহাজোট বিক্ষোভ পালন করে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা অফিসার হত্যার ঘটনায় প্রদীপ কুমার দাস নামের এক পুলিশ ইন্সপেক্টর জড়িত হওয়ায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষপূর্ণ উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিন্দুদের দেশদ্রোহী, ইন্ডিয়ার চর ও র-এর এজেন্ট-ইত্যাদি মিথ্যা উস্কানীমুলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। হিন্দুদের প্রকাশ্যে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে। গোবিন্দ বাবু অভিযোগ করেন, একশ্রেণীর সাম্প্রদায়িক মানুষ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সকল পুলিশ কর্তাসহ সমস্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা বিদ্বেষমুলক বক্তব্য প্রচার করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে ক্ষেপিয়ে তুলেছে। ফলে সারা দেশে মারাত্মক জাতিগত বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়েছে। ওসি প্রদীপ অপরাধী হলে তিনি অবশ্যই শাস্তি পাবেন।

                  আরও পড়ুন: এগরায় মারুতি গাড়িতে অগ্নিকাণ্ড, হুড়োহুড়ি এলাকায়

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুলিশ কর্তা সহ সকল সরকবারি আধিকারিক দেশপ্রেমিক। তারা নিজ যোগ্যতা ও মেধার বলে বিভিন্ন পদে আসীন হয়ে দেশ সেবায় আপোষহীনভাবে ভূমিকা রাখছেন। তবে একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই মুসলিম সম্প্রদায়ের আধিকারিকদের কাছ থেকে আমরা যেমনটা সহযোগিতা পাই, হিন্দু পুলিশ আধিকারিকদের কাছ থেকে তেমন কোন সহযোগিতা পাই না। সেকারণে আমরা কোন হিন্দু পুলিশ আধিকারিকের পক্ষে এই প্রতিবাদ করছি না। আমরা প্রতিবাদ করছি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা সামাজিক ও জাতিগত বিদ্বেষ তৈরী করছে তাদের বিরুদ্ধে। অসাম্প্রদায়িক শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে।

                       আরও পড়ুন: দাদাকে খুন করেছি, এবার শাস্তি পেতে চাই!

গোবিন্দ প্রামাণিক আরও বলেন, বাংলাদেশ হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। মধ্যযুগের মুসলিম শাসন আমলেও এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন থেকে বিশ্বস্ততার সাথে দেশের সেবা করেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধেও হিন্দু সম্প্রদায়ের কর্মকর্তাগণ অধিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। হিন্দু সমাজ শান্তি প্রিয়। অথচ একটি চক্র ফেসবুকে ও ইউটিউবে উষ্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি ও মুসলিম সমাজের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে। সামাজিক অস্থিরতা এই পর্যায়ে যে কোন মুহুর্তে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ইতোমধ্যে এর কুফল সমগ্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর পড়তে শুরু করেছে। ফলে কারণে অকারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর বিদ্বেষমূলক আচরণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

   আরও পড়ুন: শিক্ষা থেকে বঞ্চিত পড়ুয়ারা, স্টাডি সেন্টার খুলে সাহায্যের হাত বাড়াল RSS

সমাবেশে হিন্দু মহাজোটের সহ সভাপতি প্রদীপ পাল বলেন, বাংলাদেশে সরকারি হিন্দু চাকুরীজীবী মাত্র ৩%। ৬৪ জেলায় মাত্র ৩ জন জেলা প্রশাসক, ৮২ জন সচিবের মধ্যে মাত্র ৬ জন হিন্দু। সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে কোন হিন্দু নেই। সরকারি ব্যাংকের সর্বোচ্চ পদে কোন হিন্দু নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ১ জন হিন্দু। একটি অপপ্রচার চালাচ্ছে দেশের ৫১২টি থানার ওসি হিন্দু, সচিবালয় হিন্দু আলয় হয়ে গেছে। দেশ ভারত হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায় সামাজিক বিদ্বেষসৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বলেন, আমরা এদেশের সংখ্যলঘু, সেকারণে সংখ্যাগরিষ্ট সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা সকলের সহযোগীতা নিয়ে সকলের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই। হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিধান বিহারী গোস্বামীর পৌরহিত্যে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দ্বীনবন্ধু রায়, বরিষ্ট সহ সভাপতি প্রদীপ পাল, মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুগ্ম মহাসচিব সাংবাদিক সুজন দে, হিন্দু মহিলা মহাজোটের সভাপতি প্রীতিলতা বিশ্বাস, সহ সভাপতি কাকলী নাগ, সাধারণ সম্পাদক মুক্তা বিশ্বাস, সাংগঠণিক সম্পাদক সাগরিকা মন্ডল, প্রচার সম্পাদক স্বপ্না রাণী দাস, লক্ষী রাণী, অঞ্জনা চক্রবর্তী, হিন্দু স্বেচ্ছা সেবক মহাজোটের সভাপতি সঞ্জয় শীল, সহ সভাপতি বিষ্ণ চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ, ঢাকা জেলা হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট উজ্জ্বল কুমার মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক গোপাল পাল, হিন্দু মহাজোটের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ-এর সভাপতি ডি.কে সমির, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি কিশোর কুমার বর্মন, নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ শঙ্কর, প্রধান সমন্বয়কারী প্রশান্ত হালদার, সহ সভাপতি গৌতম সরকার, সাংগঠণিক সম্পাদক প্রবীর সরদার, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দেবনাথ, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, সাধারণ সম্পাদক সজিব কুন্ডু তপু, সিঃ সহ সভাপতি প্রণব হালদার প্রমূখ।

Related Articles

Back to top button
Close