পুজোর মুখে ডেবরায় বিপদ সীমার ওপরে করোনা গ্রাফ! আক্রান্ত ৬০ ছাড়াল

তারক হরি, পশ্চিম মেদিনীপুর: অক্টোবর মাসেই ভয়াবহ করোনা সংক্রমনের মুখে পড়ল ডেবরা থানা এলাকা। গত ৩ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর অবধি শুধুমাত্র আরটি/পিসিআর রিপোর্ট মোতাবেক ডেবরা থানা এলাকায় এখনও পর্যন্ত ৬০ জনেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যা সমগ্র এই করোনা কালের মধ্যে সর্বাধিক। এছাড়াও এই মুহূর্তে ডেবরার বিভিন্ন এলাকায় করোনার আ্যন্টিজেন পরীক্ষা চলছে যার রিপোর্ট এখনও পৌঁছায়নি।
নিশ্চিতভাবে সেই সংখ্যা টা আরও বাড়বে। এই মুহূর্তে বড়সড় সংক্রমনের মুখে রয়েছে জালিমান্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিচক এলাকা। এ মাসের গোড়াতেই সতর্ক করা হয়েছিল যে ডেবরা এলাকায় করোনা সংক্রমনের এপিসেন্টার বালিচক ও ডুঁয়া এলাকায় রয়েছে। ১১ তারিখের আরটি/পিসিআর রিপোর্টও তাই বলছে। এদিনের আক্রান্ত বাকি ৪জনের তিনজনই ডুঁয়া ১০/২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোলোই গ্রামের।
একই পরিবারের ৬৪ বছরের বৃদ্ধা ও এক যুবক আক্রান্ত হয়েছেন ওখানে। পাশাপাশি একটি পরিবারের ৫বছরের শিশুকন্যার দেহেও করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। অন্যদিকে লোয়াদায় আক্রান্ত হয়েছেন এক যুবক। গত সাত দিনের এই পর্যালোচনায় গোড়ার দিনটি হল ৫ অক্টোবর যেদিন আরটি/পিসিআর রিপোর্ট মোতাবেক এই থানা এলাকায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ১১জন। সেদিনও বালিচক থেকে ৬ জন এবং ডুঁয়া এলাকা থেকে ২জনের পজিটিভ পাওয়া গেছিল। তবে এই সাত দিনের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ৮ই অক্টোবর। ওই দিন এক সাথে প্রায় তিন ডজন মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর বালিচক ডুঁয়া ছাড়াও সেদিন ডেবরা থানার সর্বত্রই করোনার অস্থিত্ব ধরা পড়েছিল।
আর ক’দিন মাত্র হাতে, তারপরেই ঢাকে কাঠি পড়বে, স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব জনমানসে ব্যাপকভাবে পড়তে শুরু করল। বাজার-হাট, পুজোর কেনাকাটার ভিড় জানান দিচ্ছে আসন্ন দুর্গোৎসবের আসল চেহারা। এদিকে রাজ্যে করোনার প্রকোপ প্রতিদিন কয়েক গুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যা পরিকাঠামো, তাতে এত মানুষের চিকিৎসা কোনভাবেই সম্ভব নয়। এমনকি যেসব ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাঁরা ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়ে কোয়ারেন্টাইনে অথবা এই অবস্থাতেই ডিউটি পালন করে চলেছেন।
বর্তমানে ডেবরা ব্লকের মানচিত্রে পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণে সর্বত্রই করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে বিপদ সীমার ওপরে রয়েছে সংক্রমন। উৎসবের আবহে আনন্দ ও উল্লাসে করোনার পারদ যে উর্ধমুখী হবে, তার আগাম পূর্বাভাস সহজেই অনুমেয় করা যায় এবং স্বাস্থ্য সচেতনত চিকিৎসা মহল ইতিমধ্যেই হৈ-হুল্লড়, অবাধ জনাসমাবেশ থেকে সাধারন মানুষদের বিরত থাকার বাণী শুনিয়েছেন। করোনাকে কোনভাবেই অবহেলা করা চলবেনা তা নাহলে উৎসব শেষে আরও ভয়াবহ জায়গায় পৌঁছে যেতে পারে করোনা সংক্রমন।