কুমারগ্ৰামে সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করেই রমরমিয়ে চলছে জারবন্দি পানীয় জলের ব্যবসা

সুকুমার রঞ্জন সরকার, কুমারগ্রাম: সরকারি নিয়ম বিধির তোয়াক্কা না করেই কুমারগ্রাম ব্লক জুড়ে চলছে জার বন্দি পানীয় জলের ব্যবসা। বেশ কয়েকটি কারখানায় জার বন্দি হচ্ছে পানীয় জল, চার চাকা বা তিনচাকার গাড়ি বোঝাই করে সেই জল পৌঁছে যাচ্ছে গ্রাহকদের বাড়িতে। প্রতিটি কুড়ি লিটারের জার বিক্রি হচ্ছে ত্রিশ টাকা দরে। জার বন্দি জলকেই বিশুদ্ধ পানীয় জল মনে করে পান করছেন জনসাধারণ। তারা জানতেও পারছেননা সেই জারবন্দি পানীয় জল কতটা বিশুদ্ধ। জারের গায়ে নেই কোনো লেবেল। এটাও তাদের অজানা কারখানায় যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে পানীয় জল জার বন্দি করা হচ্ছে কিনা। বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্রতি সাধারন মানুষের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে জলের ব্যবসায় ফুলে ফেঁপে উঠছেন জল কারখানার মালিকরা।
জারবন্দি পানীয় জলের কারখানা চালাতে হলে সরকারি নিয়ম নির্দেশিকায় বলা হয়েছে ভু- গর্ভস্থ জল উত্তোলনের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন সরকারি অনুমতি। তারপর কারখানায় জলের বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের জন্য একজন কেমিষ্ট নিয়োগ, এফ এস এস আই এর দ্বারা প্রদত্ত জলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত শংসাপত্র, খাদ্য দপ্তরের অনুমোদন, আই এস আই চিহ্ন গ্রহন। স্বাস্থ্য বিধিতে বলা হয়েছে সম্পূর্ণ ভাবে জীবাণু মুক্ত করে জলকে জার বন্দি করতে হবে এবং খালি জার গুলোকে ও জীবানু মুক্ত করে ধৌতকরণ এর ব্যবস্থা কারখানায় রাখতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও ক্ষুদ্র শিল্প অধিকরন দপ্তরের লাইসেন্স লাগবে।
কুমারগ্রাম ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের জার বন্দি করার যে কয়টি কারখানা আছে তাদের কোনোটিতেই এই ধরনের সরকারি বিধি নিয়ম মানা হচ্ছেনা বলে জানা গেছে। শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকে নেওয়া ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই এই কারখানা গুলো চলছে। তাদের নেই কোনো উপযুক্ত পরিকাঠামো। সাধারণ মানের নলকূপ বা কূয়ো থেকে জল উত্তোলন করে সাধারন মেশিনে পাতন ক্রিয়ার সাহায্যে জল জারবন্দি করেই বিক্রি করছেন জল ব্যবসায়ীরা। এলাকার স্বাস্থ্য সচেতন কিছু মানুষ জানান, সরকারি নজরদারি না থাকায় কারখানা মালিকরা নিজেদের খেয়াল খুশি মত এই কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিষয়টি নিয়ে কুমারগ্রামের বিডিও র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ কেউ করেননি। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই এইসব অবৈধভাবে চলা পানীয় জল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।