শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া ফ্লেক্সে ছয়লাপ হল রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের খাসতালুক

নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান: ‘লক্ষ্য স্থির,এগোচ্ছে বীর’ আমরা দাদার অনুগামী। এমন উদ্ধৃতি লেখা শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সহ ফ্লেক্সে এবার ছয়লাপ হল খোদ রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথের খাসতালুক। শনিবার সকালে পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার বিভিন্ন জায়গায় এমন অজস্র ফ্লেক্স দেখা যেতেই শোরগোল পড়ে যায়। তুঙ্গে ওঠে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বেলা বাড়তে এলাকা থেকে সেইসব ফ্লেক্স খুলে দেয় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও ব্লক তৃণমূল সভাপতির অনুগামীরা।
দাদার অনুগামীদের এমন ফ্লেক্স জেলার মেমারি ২ ব্লক ও মন্তেশ্বরের বিভিন্ন জাগাতেও দেখা যাচ্ছে। রাজ্যের দাপুটে নেতা তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সমর্থনে লাগানো এইসব ফ্লেক্স নিয়ে এখন তৃণমূল শিবিরে শুরু হয়েছে জল্পনা । কালনা মহকুমার পূর্বস্থলী দক্ষিন বিধানসভা এলাকাটি রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের খাসতালুক হিসাবেই পরিচিত।এদিন এই বিধানসভার ধাত্রীগ্রামের পোষ্ট অফিস মোড়,ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকা সহ বেশ কিছু এলাকায় দেখাযায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সহ ফ্লেক্স।প্রতিটি ফ্লেক্সে লেখা থাকে‘ আমরা দাদার অনুগামী’। স্বপন দেবনাথের খাসতালুকে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া এমন ফ্লেক্স ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই জনমানসে শোরগোল পড়ে যায়।
ফ্লেক্স সংক্রান্ত খবর মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কানে যেতে তিনিও ক্ষুব্ধ হোন। এরপরেই শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স খুলে ফেলতে তৎপর হন মন্ত্রী ও কালনা ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শান্তি চালের অনুগামীরা।স্থানীয়রা বলেন, রাজ্যের বিদ্রোহী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স খুলতে স্বয়ং কালনা ১ নং ব্লকের সভাপতিকে ও তাঁরা তৎপর হতে দেখেন। এমন ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ।‘আমরা দাদার অনুগামী ’বলে দাবি করে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স শনিবারই জেলায় প্রথম দেখাগেল এমনটা নয়।ইতিপূর্বে ‘আমরা দাদার অনুগামী’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে কিছু যুবক কাটোয়ায় ‘মাস্ক’ বিলি ও বস্ত্র বিলির অনুষ্ঠান করেছিল । মন্তেশ্বরেও জানান দিয়েছিল তাদের উপস্থিতি।এবার একই রকম ফ্লেক্সের সমাহার দেখাগেল পূর্বস্থলী ও মেমারিতে।জানা গিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার আরও বিভিন্ন ব্লকে সক্রিয় হয়েছে দাদা অর্থাৎ রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা।
ওইসব ব্লকেও এমন ফ্লেক্স ঝুলতে দেখতে পাওয়াটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে এই বিষয়টিকেই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের মত দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত থেকেও যারা তৃণমূলের কোনও কমিটিতে ঠাঁই পাননি,তাঁরাই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।তৃণমূল নেতৃত্ব এই ঘটনাকে বিজেপির চক্রান্ত বলে মুখে দাবি করলেও তলে তলে শুরু হয়েছে শুভেন্দু অনুগামীদের চিহ্নিত করার পক্রিয়া।
তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র তথা পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সহ- সভাধিপতি দেবু টুডু এই প্রসঙ্গে যদিও বলেন,‘কারা ওইসব ফ্লেক্স লাগাচ্ছে তা আমাদের জানা নেই।অস্থিরতা তৈরি করতে বিজেপি ও সিপিএমের লোকজন রাতের অন্ধকারে ওইসব ফ্লেক্স লাগিয়ে দিতে পারে। ’অন্যদিকে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বক্তব্য, ‘কে কোথায় কি করছে বলতে পারবো না।আমরা একমাত্র দিদির অনুগামী।তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।দিদি সবার নেত্রী’।তবে সিপিএম নেতা অশেষ কোনার ও বিজেপির মণ্ডল সভাপতি পিন্টু ভট্টাচার্যের দাবি,‘যা ঘটছে তার সবটাই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।’