অম্বেদকরের সংবিধান নয়, বাংলায় চলে দিদির সংবিধান! তপসিলি মোর্চার অবস্থানে কটাক্ষ কৈলাশের

রক্তিম দাশ, কলকাতা: সারা দেশ চলে বাবা সাহেব অম্বেদকরের সংবিধানে, কিন্তু বাংলা চলে দিদির সংবিধানে। রবিবার সংবিধান প্রণেতা অম্বেদকরের প্রয়াণ দিবসে অনুষ্টানে এসে এমন ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এদিন রাজ্য জুড়ে তফসিলি সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার ও বঞ্চনার প্রতিবাদে ধর্মতলায় অম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে অবস্থান-ধরণার ডাক দেয় বিজেপির তফসিলি মোর্চা। সারা রাজ্য থেকে কয়েক হাজার তপসিলি সম্প্রদায়ের মানুষ শিয়ালদা ও হাওড়া থেকে মিছিল করে অবস্থানে যোগ দেন। ডঙ্কা-কাঁশি বাজিয়ে মতুয়ারাও উপস্থিত হয়েছিল এদিন। অবস্থানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তফসিলি মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা বিধায়ক দুলাল বর বলেন,‘ গত সাড়ে ৯ বছর ধরে আমাদের সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার চলছে। চরম অপমান করা হচ্ছে সরকারিভাবে। বাংলায় তফশিলিরা বার বার টার্গেট হচ্ছেন। কারণ আমাদের ভোট সব রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার। তাঁরা মারও খায় আবার মারাও যায়। কারণ তাঁরা রাজনীতির মারপ্যাঁচ বোঝেন না। তাই বার বার রাজনীতির শিকার হন। এরাই বামেদের ক্ষমতায় এনেছিল। আবার ২০১১ বামেদের সরিয়ে তৃণমূলকে এনেছে। কিন্তু তাঁদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। এত বঞ্চনা তাঁদের সঙ্গে আর কোনও রাজনৈতিক দল করেনি।’
দুলালবাবুর দাবি,‘অনেক আশা নিয়ে তাঁরা বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে দিদিকে ক্ষমতায় এনেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল তাঁদের ধোঁকা দিয়েছে। একুশের ভোটে তৃণমূলের কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতবেন বাংলার সেই বঞ্চিত তপসিলিরা।’
মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তনমন্ত্রী তথা তফসিলি মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি লাল সিং আর্য বলেন, ‘তৃণমূলকে এই রাজ্য থেকে হটানোর জন্য আজকের এই সভা। যাঁরা বাবা সাহেবকে মানেন তাঁরা আজকে সামনে আসছেন। অম্বেদকর আমাদের ভোটাধিকার দিয়েছেন। আমরা গরিব এই ভোটাধিকারই আমাদের লড়াইয়ের সম্বল। আর তা দিয়েই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষরা তৃণমূলকে বাংলা থেকে উৎখাত করবে।’
কৈলাশ বিজয় বর্গীয় এদিন তৃণমূল সরকারের তীব্র সমলোচনা করে বলেন, ‘বাংলার তফসিলিদের দোষ তাঁরা বিজেপি করেন। মমতা দিদি বলছি বাংলায় বিজেপি করা কি অপরাধ? বাবা সাহেব সংবিধানের বিরোধীদের সম্মানের কথা বলেছেন। কিন্তু বাংলায় বিরোধীদের সেই সম্মান নেই। এখানে দিদির সংবিধান চলে। আমাদের কর্মীরা প্রাণ দিচ্ছেন ক্ষমতা দখলের জন্য নয়, বাংলাকে বাঁচানোর জন্য।’
তৃণমূলের বহিরাগত তত্বকে উড়িয়ে দিয়ে কৈলাশ বলেন,‘ দেশের প্রধানমন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাইরের? কিন্তু দিদি যাঁদের বাংলায় আশ্রয় দিচ্ছেন তারা কোথাকার। যে রোহিঙ্গার বিশ্ব জুড়ে জঙ্গিবাদ ছড়াচ্ছে। তারা আশ্রয় পাচ্ছে। এটা কি ভাইপোর সংরক্ষণ? এই তুষ্ঠিকরণ কেন? আপনাদের নাটক জনগন ধরে ফেলেছে। দিদি আপনি যত সাধারণ,ভাইপো তত অসাধারণ হাইফাই। তফসিলি পরিবারের যাঁরা খুন হয়েছে তাঁদের পরিবারের অভিশাপই আপনাকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাবে।’
সিএএ নিয়ে তৃণমূলের সমলোচনা করে কৈলাশ এদিন বলেন,‘ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারিদের আপনারা মোদিজির চাল দিচ্ছেন, আবার যাঁরা ছিন্নমূল হয়ে ওপার থেকে এসেছেন তাঁদের নাগরিকত্বের বিরোধিতা করছেন।’ তাঁর আশ্বাস,জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি থেকে সিএএ-ও রুল লাগু হয়ে যাবে দেশ জুড়ে।
মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তনমন্ত্রী তথা তফসিলি মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি লাল সিং আর্য বলেন,‘ তৃণমূলকে এই রাজ্য থেকে হটানোর জন্য আজকের এই সভা। যাঁরা বাবা সাহেবকে মানেন তাঁরা আজকে সামনে আসছেন। অম্বেদকর আমাদের ভোটাধিকার দিয়েছেন। আমরা গরিব এই ভোটাধিকারই আমাদের লড়াইয়ের সম্বল। আর তা দিয়েই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষরা তৃণমূলকে বাংলা থেকে উৎখাত করবে।’
এদিনের অবস্থানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়, তথাগত রায়,রাহুল সিনহা, রাজ্য নেতা অরুন হালদার,অর্চনা মজুমদার,মাফুজা খাতুন প্রমুখ। ছিলেন মনু সাহা, সঞ্জিব সরকার, শ্যামল বিশ্বাস সহ তফসিলি মোর্চার রাজ্য নেতারা।