যাদবপুরে বিজেপি কর্মীদের ভাড়া করা জেনারেটারে চলছে পুরসভা জলের পাম্প!
টানা সাতদিন বিদুৎ নেই, মানুষের পাশে গেরুয়া শিবির
রক্তিম দাশ, কলকাতা: আমফানের জেরে এলাকায় পড়েছে একাধিক গাছ। ভেঙে পড়েছে লাইটপোস্ট। টানা সাতদিন ধরে বিদুৎ নেই যাদবপুরের পূর্বাচলে। এলাকায় তীব্র জলকষ্টের সমাধানে নিজেদের পকেটের পয়সা খরচ করে জেনারেটার বসিয়ে চালু হল জলের পাম্প। এখন বিজেপি কর্মীদের ভাড়া করা সেই জেনারেটারেই চলছে কলকাতা পুরসভা জলের পাম্প! কলকাতা পুরসভার ১০৬ নম্বর ওর্য়াডের পূর্বাচলে আমরা সবাই ক্লাবের সামনে কালিদাসি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমিতে রয়েছে কলকাতা পুরসভা একটি জলের পাম্প।
এই পাম্প থেকেই পূর্বাচল মেন রোড, সাউথ পূর্বাচল রোড, মহাত্মা গান্ধী রোড, বিধান রোড, সুকান্ত সরণী, লালবাহাদুর শাস্ত্রী রোড সহ বিশাল এলাকা জুড়ে জল সরবারহ হয়। কয়েক হাজার পরিবার এই জলের উপর নির্ভরশীল। আফপানের ঝড়ে কালিদাসি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি বিশাল গাছ বিদুৎতের তার নিয়ে উপড়ে পড়ে যায়। তারপরই ওই এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং জলের পাম্পটিও অচল হয়ে যায়।
স্থানীয় বিজেপি কর্মী মনোজ দাস বলেন,‘ আমরা বার বার সিএসসি ও কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করি কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। বিদ্যুৎ না থাকায় এলাকায় জলকষ্ট তীব্র আকার ধারণ করে। আমরা ঠিক করি পুরসভা জলের পাম্পটি চালু করতে হবে। শনিবার আমাদের অঞ্চলের বিজেপি নেতা গোবিন্দ দাস এলাকার সমাজসেবি ও ব্যবসায়ী ভোলা পাইককে অনুরোধ করে একটি সাউন্ড প্রুফ জেনারেটারের ব্যবস্থা করেন। আমরা পুরসভা ও কাউন্সিলার মধুমিতা চক্রবর্তীর কাছে ফোন করে পাম্পটি চালাতে মৌখিক অনুমতি নিই। তারপর রবিবার সকাল থেকে আমরা জেনারেটার চালিয়ে পাম্পটি সচল করেছি।’
স্থানীয় বিজেপি নেতা গোবিন্দ দাস বলেন, ‘ যখন বিদ্যুৎ ও জলের দাবিতে পাড়ায় পাড়ায় অবরোধ হচ্ছে আমরা সে পথে না হেঁটে নিজেরাই সমাধান সূত্র বের করেছি। পুরসভার অপেক্ষা না করে বিজেপির কর্মীরা এলাকার গাছ কেটে পরিষ্কার করেছে। ৬৫ কেভি জেনারেটার বসিয়ে পুরসভার মতো দিনে তিনবার করে পাম্প চালানো হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দিচ্ছেন বিজেপি কর্মী বাপি, শঙ্কু , গৌতম, পটু, সঞ্জয়রা। যাদবপূর পূর্ব মন্ডলের সম্পাদক ভূদেব সরকারও একাজে হাত লাগিয়েছেন। প্রতিদিন ২ হাজার টাকার করে ডিজেল কিনতে হচ্ছে জলের পাম্প চালাতে তার পয়সা আমরা নিজেরাই দিচ্ছি।’
যাদবপুরের বিজেপি কর্মীদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি এদিন বলেন,‘ আমাদের কমীরা সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন। যেখানে প্রশাসন নেই, কাউন্সিলরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে এই কাজ অভিনন্দন যোগ্য। শুধু যাদবপুর নয়, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের কর্মীরা পথে নেমেছেন। আমি নিজে সল্টলেকে গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করেছি। এই দুর্যোগে বিজেপিকর্মীদের কাজ মানুষ দেখছেন। তৃণমুল এর জবাব ঠিক সময় পাবে।’