উপাচার্যের মৃত্যু ঘিরে শোকস্তব্ধ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্ক: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য সামন্তক দাসের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। উপাচার্যের বাড়ি থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। বুধবারের এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে সহ উপাচার্যের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি থাকতেন রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার রিজেন্ট পার্ক এস্টেটের বাড়িতে। বুধবার দুপুর ১ টা ৩০ নাগাদ তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন পরিচারিকা। তাঁকে আনতে পৌঁছেছিল গাড়িও। তবে ডাকাডাকি সাড়া না মেলায় পরিচারিকা খবর দেন তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এরপর পরিবারের তরফে খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। দুপুর আড়াইটা নাগাদ দরজা ভেঙে দেখা যায় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায় উপাচার্যকে। দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকরা জানান, মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছিল সহ উপাচার্যের দেহ। গলায় প্যাঁচানো ছিল ক্যারাটের বেল্ট। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পারিবারিক কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে আত্মহত্যা করেছেন সহ উপাচার্য।
তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব সামলেছিলেন একাধিকবার। তাঁর জ্ঞান ও বোঝানোর ক্ষমতা আকৃষ্ট করত পড়ুয়াদের। অতিথি অধ্যাপক হিসেবে পড়িয়েছেন বাংলা বিভাগেও। তিনি যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ স্টাডিজ স্কুলের সঙ্গে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুরঞ্জন দাস, রেজিস্টার স্নেহমঞ্জু বসু-সহ সকলেই চলে যান এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে। সেখানেই শেষবারের মতো তাঁরা প্রয়াত সহকর্মীকে দেখার চেষ্টা করেন। ময়নাতদন্তের পর তাঁর দেহ বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার জানিয়েছেন, “আমরা এই দুঃসংবাদ মেনে নিতে পারছি না। অধ্যাপক স্যমন্তক দাস আমাদের অত্যন্ত প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন। উনি ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্মীদের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। তাঁর অকাল প্রয়াণে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ের দিন নতুন করে জানানো হবে।”
অন্যদিকে যাদবপুরের শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক সমীর চক্রবর্তী বলেন, “দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ওকে চিনি। চিনি বললে ভুল হবে। আমাদের অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিল। একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আমরা একটি বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারতাম। ওর জ্ঞান এবং মেধা দেখে আশ্চর্য লাগতো। আমাদের মধ্যে অনেক তর্ক হত। কিন্তু তারপরে আমরা একটা চা নিয়ে ভাগ করে খেতাম।”