যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের ডাকা বুধবারের ভার্চুয়াল সভায় উপাচার্যরা উপস্থিত না হওয়ায় ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে দুষলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। বৃহস্পতিবার বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।সাংবাদিক বৈঠক থেকে একরাশ উদ্বেগও প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “বাংলার শিক্ষার মান নেমে গিয়েছে। সবকিছুর পিছনে রাজনীতি রয়েছে। টাকা নিয়ে ভরতি করা হচ্ছে। এর ফলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের ছেলেমেয়েরা মাইগ্রেন্ট লেবার হয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে কারণ এখানে কোনও কাজ নেই।”
রাজ্যপালের দাবি, ‘উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের কথা বললেও শোনেনি রাজ্য। তাঁর মতে দেশের কোনও রাজ্যে এমন পরিস্থিতি নয়। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখি। কী করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য প্রশাসন, প্রশ্ন তুলি চিঠিতে। রাজ্যপালের অভিযোগ, ‘৬ মাস পরেও মুখ্যমন্ত্রী উত্তর দেওয়ার সময় পাননি। তিনি বলেন, এই রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থা রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত। রাজনীতির ফাঁস ক্রমেই শিক্ষাব্যবস্থার উপর চেপে বসছে।
কোনও উপাচার্যই রাজ্যপালের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বৈঠকে যোগ দেননি। এরপরই রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে টুইটে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে রাজভবনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে প্রশ্ন তোলেন, কেন সম্মতি দিল না রাজ্য। সবকিছুর পিছনে গভীর পরিকল্পনা রয়েছে। এতে পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছে এমনটাও বলেন তিনি। উপার্চাযদের সঙ্গে বৈঠকের সম্মতি না মেলায় ফের প্রকাশ্যে রাজ্য-রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব। বৃহস্পতিবার বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ফের ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সাংবাদিক বৈঠক থেকে একরাশ উদ্বেগও প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “বাংলার শিক্ষার মান নেমে গিয়েছে। সবকিছুর পিছনে রাজনীতি রয়েছে। টাকা নিয়ে ভরতি করা হচ্ছে। এর ফলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের ছেলেমেয়েরা মাইগ্রেন্ট লেবার হয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে কারণ এখানে কোনও কাজ নেই।”কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ে যে নিয়ম দেখিয়ে রাজ্য সরকার রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছিলেন, তার বৈধতা নিয়েই এবার প্রশ্ন করলেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘উপাচার্যদের নিয়োগপত্র বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে রাজ্যপালের। রাজ্য সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।’
আরও পড়ুন: ‘কংগ্রেসে রাস্তা এখনও খোলা আছে’ পাইলটকে হাতছাড়া করতে নারাজ রাহুল! গেহলটকে সংযতর বার্তা
করোনা পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের নানা সমস্যা নিয়ে পর্যালোচনার জন্য গত ৭ জুলাই উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই চিঠিতে উপাচার্যদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। উত্তরে উপাচার্যরা জানান, রাজ্যের নয়া বিধি অনুযায়ী সেই চিঠি উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে তাঁদের কাছে যাওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই গত সোমবার এবং মঙ্গলবার রাজভবনের তরফে আরও দুটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্যরা। যা চূড়ান্ত অপমানজনক এবং ভীতি উদ্রেককারী বলে দাবি তাঁদের। এই বৈঠকে সম্মতি দেয়নি রাজ্য সরকারও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে চিঠিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, উপাচার্যরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্বাধীন ভাবে কাজ করে। শিক্ষা দফতরের তত্ত্ববধানে গোটা পরিকাঠামো পরিচালিত হয়। মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠির পরই বুধবার টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। ‘রাজনৈতিক খাঁচায়’ শিক্ষা বন্দি হলে ধ্বংসাত্মক এবং আত্মঘাতী হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার ফের এই ইস্যুতে রাজ্যের সমালোচনা করলেন তিনি।
রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জগদীপ ধনকড়। সম্প্রতি স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তা মেটাতে ময়দানে নেমেছিলেন রাজ্যপাল। পরীক্ষা নিয়ে ১৫ জুলাই উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ধনকড়। কোভিড পরিস্থিতিতে উপাচার্যদের আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন ভারচুয়াল বৈঠকে যোগ দেওয়ার। কিন্তু সেই বৈঠকে সম্মতি দেয়নি রাজ্য। ফলত গতকাল কোনও উপাচার্যই রাজ্যপালের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বৈঠকে যোগ দেননি। এরপরই রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে টুইটে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে রাজভবনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে প্রশ্ন তোলেন, কেন সম্মতি দিল না রাজ্য। সবকিছুর পিছনে গভীর পরিকল্পনা রয়েছে। এতে পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছে এমনটাও বলেন তিনি।