fbpx
পশ্চিমবঙ্গহেডলাইন

কাঁকসার জঙ্গলমহলে প্রথম পালনে টিকল না করকনাথ মুরগী

জয়দেব লাহা, দুর্গাপুর: করোনা সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে। ভ্যাকসিন আবিস্কার বিশ বাঁও জলে। সংক্রামক রুখতে চলছে মাঝে মধ্যেই লকডাউন। মারণ ওই রোগ মুক্তির দিশা পেতে একটাই উপায় শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। সেই প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চিকিৎসকরা হাই প্রোটিন খাদ্য তালিকায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছে। তখন কাঁকসার জঙ্গলমহলে প্রথম পালনে টিকল না করকনাথ মুরগী পালন। কারন খুঁজতে মরিয়া কাঁকসা ব্লক প্রানী সম্পদ বিকাশ দফতর।

প্রসঙ্গত, গত পাঁচ মাস ধরে চিনের উহান উজাড় করা করোনা সংক্রমণে সিটিয়ে গোটা বিশ্ব। সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতে দফায় দফায় হয়েছে লকডাউন। তবুও হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। মারণ ওই রোগের কামড় থেকে বাঁচতে এখনও কোন দিশা দিতে পারেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। রোগমুক্তির উপায় হিসেবে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে তাবড় তাবড় চিকিৎসকরা। আর সেই জন্য ভিটামিন, খনিজগুন, প্রোটিন যুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞমহল। আর এই করোনা কামড়ে ত্রস্ত যখন গোটা দেশ। তখন প্রথম পালনে কাঁকসার জঙ্গলমহলে হাই প্রোটিন সমৃদ্ধ করকনাথ মুরগী প্রানেই টিকল না। অচিরেই শ’য়ে শ’য়ে মুরগী মারা পড়ল। মুনাফার আশায় জল ঢালা পড়ল।

[আরও পড়ুন- সেপ্টেম্বর মাসেও রাজ্যে বহাল লকডাউন, দেখে নিন কবে কবে]

কাঁকসা ব্লক প্রানী সম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে জেলায় প্রথম কাঁকসায় করকনাথ মুরগী মহিলাদের দেওয়া হয়। আত্মা প্রকল্পে ব্লকের সেঁটের বাঁধ, দোমড়া, ধোবারু, সুন্দিয়াড়া, গ্যাড়াদহ গ্রামে ৪০ জন উপভোক্তাকে ২০ টি করে করকনাথ মুরগীর ছানা দেওয়া হয়। মুরগীর প্রজাতি এলাকায় নতুন হওয়ায় একদিনের প্রশিক্ষনও দেওয়া হয়। কিন্তু বেশীরভাগ উপভোক্তার মাসখানেকের মধ্যেই মুরগীর ছানা অজনা রোগে মারা যায়। তবে ৪০ জনের মধ্যে সেঁটেরবাধ গ্রামের মনি মুর্ম্মুর চারতী মুরগী মাস কয়েক বেঁচে ছিল। মনি মুর্ম্মু জানান, “২০ টির মধ্যে ৪ বেঁচে ছিল। প্রায় কেজিখানেক করে বড়ও হয়েছিল। একটা ডিম দেওয়া শুরু করেছিল। কিন্তু আচমকা সেগুলি অজানা রোগে মারা যায়। হঠাৎ কি রোগে মারা গেল বুঝতে পারলাম না।” গ্রামের মালতী মুর্ম্মু, রানী টুডুরা বলেন,” মুরগীর গুনাগুন শুনে স্বনির্ভরতার আশা দেখেছিলাম।

[আরও পড়ুন- কোলাঘাটে উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল দোকান সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি]

কিন্তু ছানা অবস্থায় কি কারনে মারা গেল বুঝতে পারলাম না। তবে নতুন করে করকনাথ মুরগী দেওয়ার আবেদন জানাবো।” প্রশ্ন, নতুন এই প্রজাতির মুরগী পালনে পদ্ধতিতে বা পরিচার্যায় খামতি ছিল? জানা গেছে, করকনাথ মুরগী দেশীয় প্রজাতির এবং মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়া জেলায় প্রচুর চাষ হয়। এই মুরগীটির সাধারনত কালো রঙের হয়। এমনকি মুরগীটির মাংস, হাড় পর্যন্ত কালো। ডিমও কালচে রঙের হয়। ৭-৮ মাসের মধ্যেই পুর্ণাঙ্গ হয়। পুরুষ মুরগী আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের হয়। স্ত্রী প্রজাতি দুই থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত হয়। বিশেষজ্ঞ মহল সূত্রে জানা গেছে যে,  করকনাথ মুরগীর মাংসে ফ্যাট কম। প্রোটিন, মিনারেল ও ভিটামিন প্রচুর। উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগীর ও শিশুদের খাওয়া উপকারী। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই মুরগীর মাংস বাজারে দাম ৮০০-৯০০ টাকা কেজি।

কাঁকসা ব্লক প্রানী সম্পদ বিকাশ আধিকারিক সঞ্জয় আকুলি বলেন,” এই প্রজাতির মুরগী সাধারনত জঙ্গলে খোলামেলাভাবে পালিত হয়। তাতে মাংসের স্বাদ সুস্বাদু হয়। তবে কি কারনে মুরগীর ছানা মারা গেল খতিয়ে দেখা হবে।”

Related Articles

Back to top button
Close