পাকিস্তানের অনুরোধ সত্ত্বেও আইওসি বৈঠকে নেই কাশ্মীর ইস্যু

নিয়ামঃ রাষ্ট্রপুঞ্জের পর এবার মুসলিম বিশ্বে কোণঠাসা হচ্ছে পাস্কিস্তান। বিষয় এক, কাশ্মীর ইস্যু। শুক্রবার, নাইজারে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসি’র বৈঠকের কর্মসূচিতে কাশ্মীর ইস্যু রাখার অনুরোধ জানিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু, বিবৃতি জারি করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামিক দেশগুলির সংগঠন- ওআইসি। ফলে লাভের পরিবর্তে আন্তর্জাতিক মহলে মুখ পুড়ল ইমরান খানদের।
গত বুধবার ইমরানের প্রশাসনের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, ওআইসি’র দু’দিনের বৈঠকে যোগ দেবেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। যেখানে ‘জম্মু ও কাশ্মীর বিতর্ক’সহ মুসলিম দুনিয়া যে বিভিন্ন বিষয়গুলির সম্মুখীন হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। গত বছরের অগস্টে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহারের পর জম্মু ও কাশ্মীরের ‘ক্রমহ্রাসমান মানবাধিকার এবং মানবিক পরিস্থিতি’-র বিষয়টিও কুরেশি তুলে ধরবেন।’ কিন্তু, পাকিস্তানের বহু চেষ্টা সত্ত্বেও ওআইসি’র বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে নেই কাশ্মীর ইস্যু।
পাকিস্তানের অনুরোধে আমল দেয়নি সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশ, যাদের প্রভাব এই মুহূর্তে ওআইসি’তে সবচেয়ে বেশি। ইংরাজি ও আরবিতে ওআইসি’র পক্ষ থেকে যে বিবৃতিটি দেওয়া হয়েছে, তাতে লক্ষ্যণীয়ভাবে কাশ্মীরের কোনও উল্লেখ নেই। সেখানে বলা হয়েছে, শান্তি এবং উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়া আসন্ন বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু হতে চলেছে। পাশাপাশি, প্যালেস্তাইন পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যাও রয়েছে আলোচনার তালিকায়। তবে মুখরক্ষায় নানা বাহানা দিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরীর দাবি করেছেন, ওআইসি’র আলোচনার তালিকায় কাশ্মীর স্থায়ী বিষয়।
তবে, ওআইসি’তে পাকিস্তানের এহেন অবস্থা নিয়ে একেবারেই অবাক নয় কূটনৈতিক মহল। কারণ ৫৬ সদস্যবিশিষ্ট ওআইসির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য – সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে তলানিতে থেকেছে। সম্প্রতি, কাশ্মীর ইস্যুতে রিয়াধের অবস্থানের সমালোচনায় করায় ইমরানের সরকারকে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ আগেভাগে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সৌদি আরব। যে ঋণ ২০১৮ সালে ইসলামাবাদকে দিয়েছিল রিয়াধ। আর, সেই ধাক্কার পর তুরস্ক এবং মালয়েশিয়ার সঙ্গে ইসলামিক দেশগুলির নয়া জোট গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু তাতেও সফল হননি। তারই মধ্যে গত বুধবার নিরাপত্তাজনিত কারণে সাময়িকভাবে পাকিস্তান, আফিগানিস্তান-সহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি।