কোলাঘাটের শঙ্খ শিল্প চরম সংকটে

বাবলু ব্যানার্জি, কোলাঘাট: হিন্দুদের মঙ্গল ধ্বনি শঙ্খ তৈরীর কাজ বন্ধ। বড় পুজো আসছে শঙ্খের উপর দেবী দুর্গা, কালী নানা দেবদেবীর মূর্তি থেকে মনীষীদের নিখুঁত ছবি আঁকার কাজ বন্ধ।স্বামীর মঙ্গলের জন্য নারীদের হাতে সজ্জিত শাখা তৈরীর কাজ ও একপ্রকার বন্ধ। কোলাঘাট ব্লকের যোগীবেড় কুমারহাট গ্রামের শঙ্খ শিল্পীরা চরম সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে বর্তমানে।
লকডাউন থাকায় ৪০ থেকে ৫০টি পরিবার অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে বলে তাদের অভাব-অভিযোগের মধ্যেই প্রকাশ।
তবুও শিল্পীরা তাদের অতীত ঐতিহ্য কে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় তাদের পূর্ব পুরুষের ব্যবসা বলে।
গত একমাস ধরে লকডাউন চলছে।যান চলাচল একপ্রকার বন্ধ। কাঁচামাল আসা বন্ধ। মূলত তামিলনাড়ু থেকে কাঁচামাল আসে। এক একটি কাঁচামালের দাম সাইজ অনুযায়ী অর্থাৎ শঙ্খের দাম ৭০০ থেকে বারোশো টাকা। গভীর সমুদ্র থেকে এই কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হয়। প্রখর রৌদ্রে শুকনো করে নানা জিনিসপত্র তৈরি করার ক্ষেত্রে নিজনিজ দক্ষতায় নিপুন নিদর্শন রাখে এখানকার শিল্পীরা।এদেরই তৈরি শঙ্খের জিনিসপত্র রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে এখানকার শিল্পের মর্যাদা রক্ষা করে চলেছে।
আগের ব্যবসা আর বর্তমানে যে ব্যবসা চলছে তা আকাশ-পাতাল তুলনা। লাভের অংক কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সুজিত দত্ত,তপন দত্ত,রবি নন্দী, প্রশান্ত হাজারী ,প্রশান্ত দত্ত সহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তাদের প্রথম অভিযোগ বর্তমান সরকারের প্রতি,এই ক্ষুদ্রও কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। কোলাঘাট ও তমলুক জেলা ক্ষুদ্র শিল্প দপ্তরে যাওয়া হলে ঋণের জন্য বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়নি বলে ওই পেশার সঙ্গে যুক্ত কারিগরদের অভিযোগ।
এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এবার তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান বিপ্লব রায় চৌধুরীর কাছে দরবার হবেন।
রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সরকার এইসব শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সচেষ্ট। এই গ্রামে শিল্প যাতে তাদের অতীত ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে পারে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।