করোনাতেও চাঁদার জুলুম, ‘লুট’ বেতনের ১৮ হাজার টাকা, গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: করোনা আবহেও বন্ধ হয়নি চাঁদার জুলুমবাজি। মানুষের রোজগার যাই হোক না কেন, পুজোর নামে ফের এই জুলুমবাজির শিকার হতে হল হরিদেবপুরের এক গাড়িচালককে। অভিযোগ, হরিদেবপুরের ওই যুবক অজয় মিশ্রের কাছ থেকে রাস্তায় পথ আটকে কালীপুজোর জন্য তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়া হল বেতনের পুরো ১৮ হাজার টাকা। তিনি এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করার পর গ্রেফতার করা হয়েছে তিন ক্লাব সদস্যকে।
জানা গিয়েছে, বুধবার ৪ নভেম্বর এই ঘটনা ঘটে। তারপর বৃহস্পতিবারই ক্ষতিগ্রস্ত যুবক হরিদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। অজয়কুমার মিশ্র নামে ওই যুবক জানিয়েছেন, তিনি পেশায় গাড়িচালক এবং হরিদেবপুর থানার নেপালগঞ্জের জুলপিয়ার বাসিন্দা। ঘটনার সময়ে তিনি সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। পকেটে অক্টোবর মাসের বেতন বাবদ ১৮ হাজার ১৮০ টাকা ছিল। হরিদেবপুরের হসপিটাল রোডে ৪ নভেম্বর কালীপুজোর চাঁদার নাম করে স্থানীয় একটি ক্লাবের কয়েক জন সদস্য তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি জানান, অত টাকা তিনি দিতে পারবেন না। তিনি বলেন, ‘‘দেড়শো- দু’শো টাকা দিতে চেয়েছিলাম। সেই টাকা বার করতে গেলে ওই যুবকেরা আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করে। আমি ২০০ টাকা বার করার সময়ে ওরা বেতনের টাকা দেখতে পায়।”
অভিযোগ, এর পরেই তাঁর মাথার পিছনে কোনও কিছু দিয়ে মারা হয়। তিনি রাস্তায় পড়ে গেলে সবাই মিলে তাঁকে মারতে শুরু করে। অজয়ের পকেট থেকে তাঁর বেতনের পুরো টাকাটাই নিয়ে নেওয়া হয়। যদিও ওই ঘটনার পিছনে ক্লাবের পুরনো রাগ রয়েছে বলে অজয়ের অভিযোগ। শনিবার পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তবে রবিবার সকালে এই ঘটনা সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে নেয় পুলিশ।
২০১৭ সালে তিনি যখন বাড়ি করছিলেন, তখন ওই ক্লাবের ছেলেদের থেকেই নির্মাণসামগ্রী, শ্রমিক নিতে হয়েছিল তাঁকে। শুধু তা-ই নয়, সেই সময়েও তাঁর থেকে ১০ হাজার টাকা ক্লাবের তরফে চাওয়া হয়। অজয়ের কথায়, ‘‘৪ হাজার দিয়ে বাকি টাকা ধীরে ধীরে দেব বলে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরেও প্রায়ই আমাকে রাস্তায় আটকে সেই টাকা আদায়ের চেষ্টা করত।’’
বুধবার তারা সেই ঘটনারই প্রতিশোধ নিয়েছে বলে দাবি অজয়ের। তাঁর কথায়, ‘‘মার্চের শেষ থেকে তিন মাস পুরো বসেছিলাম। কোনও বেতন মেলেনি। লকডাউন ওঠার পরে কাজ শুরু হয়েছে সবে। এখন কী করব জানি না।’’