প্রবেশনে থাকা মহিলা সাব ইন্সপেক্টরদেরও পোস্টিং’র অর্ডার স্বরাষ্ট্র দফতরের
অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: রাজ্যে মহিলাঘটিত অপরাধ থেকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যেভাবে মহিলাদের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে রাজ্যের পুলিশ বাহিনীতেও মহিলা পুলিশদের আরও বেশি অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। পদোন্নতি পার্থক্য মুছে ফেলতে ইতিমধ্যেই ‘কমন গ্রেডেশন সিস্টেম’-এর মাধ্যমে সম-পদোন্নতির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার বাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির সময়ে যাতে মহিলা পুলিশকর্মীদের প্রশিক্ষণেও কোনও ফাঁক না থাকে, তার জন্য এবার প্রবেশনে থাকা মহিলা পুলিশ অফিসারদেরও সাধারণ থানায় পোস্টিং দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রবেশনের সময়ে থানার সঙ্গে যুক্ত না থাকলে আইনগত পুঁথিবিদ্যা থাকলেও পরিস্থিতি অনুযায়ী কি ভাবে মামলার তদন্ত করতে হবে, মামলার বিবরণ ও ব্যাখ্যা কিভাবে গুছিয়ে লিখতে হবে, সেই বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকে না অনেক অফিসারদেরই। ফলে অপরাধীর দ্রুত ছাড় পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পুরুষ পুলিশকর্মীরা যদিও বা প্রবেশন সময়ে দু’একটি থানার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন, মহিলা পুলিশকর্মীরা অনেক সময়ে মহিলা থানাতেই প্রবেশনে কাটাতে বাধ্য হন। আর মহিলা থানাতে কাজের চাপ মূল থানার তুলনায় অনেকটাই কম থাকার ফলে প্রশিক্ষণেও ঘাটতি থেকে যায়।
তাই সাধারণ থানা থেকেই যাতে পেশাগতভাবে তাঁরা সব ধরনের কাজ করে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা পুলিশকর্মীরাও দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, সেই কারণেই জারি করা হয়েছে এই নির্দেশিকা। তবে প্রবেশনারি অফিসার দের ওপর কাজের চাপ দিয়ে যাতে আসল অফিসাররা ফাঁকি না দেন, তার জন্য সদ্য নিযুক্ত হওয়া অফিসারদের করণীয় কাজ সম্পর্কেও রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর নির্দেশিকা জারি করেছে।
ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নতুন পুরুষ প্রবেশনারি অফিসারদের সঙ্গে এবার থেকে নতুন মহিলা পুলিশকর্মীদেরও অপরাধস্থলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটির জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। সেইসঙ্গে নিয়মিত তাঁদের দিয়ে রাতে পেট্রলিং-এর কাজ করানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনও ইউনিটে নয়, দু’বছরের প্রবেশন পিরিয়ডে তাঁদের থানাতেও ডিউটি দিতে হবে। কতটা দায়িত্বশীল ভাবে তারা কাজ করছেন, তা এসপি, ডিআইজি রেঞ্জ এবং কমিশনারেটের সিপিরা আসল চাকরির মতই মূল্যায়ন করবেন। প্রশিক্ষণে ঘাটতি থাকলে তাদের মূল পোস্টিংও আটকে যেতে পারে। তাই পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদেরও সমান কর্মদক্ষতা তৈরিতে এবার নজর দিল রাজ্য প্রশাসন। যাতে সদ্যপ্রয়াত রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র ব্যাটেলিয়নের কমান্ডিং অফিসার দেবশ্রী চ্যাটার্জির মত আরও অনেকেই বাহিনীর মুখ উজ্জ্বল করতে পারেন।