
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্যের বর্তমান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ার পার্সন এক্তিয়ার বহিভূর্ত কাজ করছেন। আভিযোগ করলেন অল ইন্ডিয়া লিগাল এড ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তথা সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার তিনি এক বিবৃতি প্রকাশ করে এই দাবি করেন।
পাশাপাশি তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের বর্তমান চেয়ারপার্সনের বিভিন্ন ধরণের নিয়ম ও এক্তিয়ার বহির্ভূত কান্ডের কথা আমরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী , মূখ্যসচিব ও সরাষ্ট্র সচীবকে জানাবাে এবং দরকার পড়লেও আদালতেও যাবাে ।’
এদিন জয়দীপ রাজ্য মানবাধিকর কমিশনের চেয়ার পর্সেনের বিরুদ্ধে আভিযোগ তুলে বলেন, ‘রাজ্য মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়েছে , হিউমান রাইটস প্রােটেকশান এ্যাক্ট ১৯৯৩ এর নিয়ম অনুযায়ী , যেখানে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ আছে , রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের এক্তিয়ার কতটা এবং কি নিয়মে মানবাধিকার কমিশন কাজ করবে।কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে । এর উল্টো চিত্র । ১৯৯৩ সালে মানবাধিকার আইন সংক্রান্ত বিষয় হলেও পরবর্তিকালে মানবাধিকার কমিশনের আইন সংশােধিত হয়েছে ।
আগে কমিশনের সদস্য পাঁচ সদস্যের হলেও বর্তমানে তা সংশােধিত হয়ে তিন সদস্যের কমিশন হয়েছে। পূর্বে , মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন পদে নিয়ােগ করতে হতা কোনাে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কে। কিন্তু বর্তমানের সংশােধিত আইনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে , প্রধান বিচারপতি ছাড়াও যে কোনাে বিচারপতি মানবাধিকার কমিশনের চেয়ার পার্সন পদে নিযুক্ত হতে পারেন। কমিশনের গঠন তিন সদস্যের হলেও , চেয়ারপার্সন ও অন্যান্য সদস্যরা সমপদ মর্যাদা সম্পন্ন । চেয়ার পার্সন কোনাে ভাবেই কমিশনে স্বতন্ত্র ক্ষমতার অধিকারি নয়। কমিশনের চেয়ার পার্সন একক ভাবে কোনাে প্রকার সিন্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না। কমিশন তার পূর্ণাঙ্গ সদস্যদের নিয়েই যে কোন প্রকার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’
আইনজীবি জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এদিন দাবি করেন, ‘বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ার পার্সন এক্তিয়ার বহিভূর্ত ভাবে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন , তার বেশ কিছুনমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি। যেমন মানবাধিকার কমিশন কখােনই বিচারধীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কিন্তু বর্তমান বিভিন্ন বিষয়ের প্রেক্ষিতে দেখ গিয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সেটাই করছেন। এছাড়াও এক বৎসরের পুরানাে কেস মানবাধিকার কমিশন গ্রহণ করতে পারে না।কিন্তু কমিশন একবৎসরের চাইতেও বেশী পুরানাে কেস গ্রহণ করছে যা নিয়ম বিরুদ্ধ।’
জয়দীপবাবু আরও বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশন কোনাে কোর্ট বা আদালত নয় , তাই তার কোনাে প্রকার বেঞ্চ গঠন করার এক্তিয়ার নেই । বর্তমান মানবাধিকার কমিশনের সদস্য সংখ্যার নিরিখে কোনাে প্রকার বেঞ্চ গঠন করা নিয়ম বিরুদ্ধ । কারণ সিঙ্গল বেঞ্চ বা ডিভিশন বেঞ্চ করার মত কোনাে সদস্যই এই মুহুর্তে মানবাধিকার কমিশনের নেই । এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য , মানবাধিকার কমিশনের কোনাে সিদ্ধান্ত সরকার নাও মানতে পারে। কমিশন শুধুমাত্র যে কোনাে সরকারকে তার সিদ্ধান্ত বা নির্দেশকে কার্যকরি করার জন্য সুপারিশ করতে পারে ।
এই প্রসঙ্গে জয়দীপবাবু বলেন, ‘বর্তমান চেয়ার পার্সনের মেয়াদ কালে বিগত দিনের মানবাধিকার কমিশনের বাৎসরিক রিপাের্ট এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছে পেশ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুভার্গ্যজনক। কমিশন রাজ্য সরকারের সহযােগিতায় চলে। এমনকি কমিশনের স্টাফরাও ও অফিসাররাও ডেপুটেড ভ্যাকান্সিতে কমিশনে কর্মরত থাকেন । সুতারাং আইন অনুযায়ী রাজ্য সরকার কোনাে ভাবেই কোনাে প্রকার ইস্যুতে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন কে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নয়।’