fbpx
ব্লগহেডলাইন

ড্রাগের মতো যৌনতার নেশাও সমাজকে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে.. বাড়ছে অনলাইন সেক্স

দিব্যেন্দু রায়, ভাতার: “আদিম প্রবৃত্তি”, যার টানে চলছে জগৎ সংসার। মধ্যযুগে নারীর শরীরের অধিকার নিয়ে রাজায় রাজায় যুদ্ধ পর্যন্ত হয়েছে। হারিয়েছে কত নিরীহ প্রাণ। ধ্বংস হয়েছে কত বর্ধিষ্ণু জনপদ। আজ এই বিংশ শতাব্দীতে সেই প্রবৃত্তি আরও প্রকট ও সহজলভ্য হয়েছে ইন্টারনেটের কল্যাণে। এদিকে আবার লকডাউন পর্বের কারণে গৃহবন্দি মানুষ। সময় কাটানোর উপায় বলতে কেবল স্মার্টফোন। ফলে কিশোর-কিশোরী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পর্যন্ত আজ স্মার্টফোনের নেশায় কার্যত বুঁদ হয়ে আছে। সেই সুযোগে বাড়ছে অনলাইন যৌনতা। সমাজের একটা বড় অংশকে ভার্চুয়াল সেক্সের পাতা ফাঁদে পা দিতে দেখা যাচ্ছে। ফলে ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে তাদের। তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। আজও অনেক পুরুষ মহিলা সাদামাটা মোবাইল ব্যবহার করেন। আবার বহু সংখ্যক মানুষ স্মার্টফোনকে ব্যবহার করেন শতভাবে উপার্জনের হাতিয়ার হিসাবে।

বর্তমানে ভারতসহ গোটা বিশ্ব ধুকছে আর্থিক মন্দায়। বন্ধ হচ্ছে কলকারখানা। বাড়ছে বেকারত্ব। গ্লোবাল আপদ করোনা ভাইরাসের কারণে অবস্থা আরও বেহাল। করোনা সংক্রমন রোধ করতে দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে লকডাউন। বর্তমানে আনলক পর্ব চললেও এখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি জনজীবন। এদিকে সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার তাগিদে মানুষ আজ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন। ফলে দীর্ঘ প্রায় ছ’মাস ধরে মানুষকে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে। তাই এখন কর্মহীন মানুষের সামনে সময় কাটানোটা জলজ্যান্ত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাতে একটিই বিকল্প রয়েছে। স্মার্টফোন। তাই বলা যেতে পারে গোটা সমাজ আজ স্মার্টফোনের নেশায় বুঁদ। আর এই সুযোগেই বাড়ছে অনলাইন যৌনতা। ফেসবুক চ্যাট করতে গিয়ে মানুষ নিজের অজান্তেই জড়িয়ে পড়ছে যৌনতায় ফাঁদে। কেউ কেউ আবার ক্ষণিকের আবেগ নিরসনের জন্য অনলাইন যৌনতার পুতি গন্ধময় ক্ষেত্রে ঢুকে পড়ছে। শিকার হতে হচ্ছে ব্ল্যাকমেলিংয়ের। তা থেকে বেড়িয়ে আসতে না পেরে হয় মোটা অঙ্কের অর্থ খোয়াতে হচ্ছে, নয়তো সম্মান রক্ষার্থে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে যৌনতার ফাঁদে জড়িয়ে পড়া ব্যক্তিরা।

আরও পড়ুন: ইসলামি ভারতের চক্রান্ত ফাঁস! কাশ্মীর ও বাংলাকে টার্গেট করছে আল কায়দা জঙ্গিরা

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই এমন ব্যক্তি বিরল এই সমাজে। বাস্তব জীবনে খোঁজখবর নেওয়ার কেউ না থাকলেও ফেসবুকে বন্ধুর ছড়াছড়ি। পরিচিত অপরিচিত কত শত ব্যক্তি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়। তাদের মধ্যে অনেকের প্রোফাইল ছবি আসল থাকলেও নকল ছবির সংখ্যা নেহাত কম নয়। লাস্যময়ী কিশোরী-তরুণী, দেব-দেবী অথবা ফুলের ছবি মানেই সন্দেহজনক।অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের নাম, ঠিকানা নকলই হয়। ফেসবুক বন্ধু হয়ে যাওয়ার পর মেসেঞ্জারে সকাল- রাত্রির শুভেচ্ছা বিনিময় থেকে শুরু৷ তারপর কোথাও হোমো সেক্স তো কোথাও বিপরীত সেক্সের আবেদন। প্রথমে নগ্ন ছবি দিয়ে প্রলুব্ধ করা। শেষে মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে নগ্নতা। সেটাকে কম্পিউটারের মাধ্যমে রেকর্ড করে রাখা হয়। তারপর পটিয়ে পাটিয়ে হোয়াটস অ্যাপ নম্বর নিয়ে সেখানে ভিডিওটি পাঠিয়ে শুরু হয় ব্ল্যাকমেলিং৷ ভার্চুয়াল সেক্সের ক্ষেত্রে দু’একজন সুন্দরী কিশোরী বা তরুণীকে সামনে রেখে বড়বড় চক্র কাজ করে চলেছে। মানুষকে ব্ল্যাকমেলিং করে যে টাকা পাওয়া যায় সেটাই তাদের মুল উপার্জন।কিন্তু এরা পুলিশের নাগালের বাইরেই থাকে। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিযোগ না হওয়ায় পুলিশি তদন্তও হয় না।

যৌনতা মানুষের একটা সহজাত প্রবৃত্তি।  কিন্তু সেই যৌনতা যখন প্রকাশ্যে এসে পড়ে সেটা সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান যুগে ইন্টারনেটের রমরমার কারণে সব বয়সের যৌনতা আজ সহজলভ্য। তবে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। তার জন্য বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টা প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু সরকারিভাবে আরও কঠোরতা দরকার। তা না হলে ড্রাগের নেশার মত যৌনতার নেশাও সমাজকে ক্রমশ অবক্ষয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ও আরও নিয়ে যাবে।
আজ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে হাতে অত্যাধুনিক স্মার্ট ফোন। এক ক্লিকেই সব কিছু মিলছে। কিন্তু জ্ঞান আরোহণের পরিবর্তে তারা যদি খারাপ দিকে ঝোঁকে তাহলে দেশের পক্ষে ক্ষতিকারক।

আরও পড়ুন: বিধায়ক-সংসদের বিরুদ্ধে মামলা নিষ্পত্তি করতে উদ্যোগ হাইকোর্টের

তাই যৌনতার নেশা বন্ধ করতে হলে অনলাইনের আড়ালে এই পেশাকে আগে বন্ধ করতে হবে । তার জন্য ফেক বা নকল অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে সচেষ্ঠ হওয়া উচিত বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটে সেক্স ভিডিও পুরোপুরি ব্যান করে দেওয়ার দাবি তুলছেন তাঁরা। তবে তার সঙ্গে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক স্তরে সচেতনতার পাশাপাশি পুলিশের কড়া নজরদারি থাকলে এই প্রবণতা অনেকাংশে রোধ করা যাবে বলে মত অভিজ্ঞমহলের। সব মিলিয়ে অনলাইন যৌনতার নেশা-পেশা ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের চক্র ভাঙতে সর্ব স্তরের প্রচেষ্টা দরকার। তবেই একটা সুস্থ সুন্দর সমাজ গঠন সম্ভব।

Related Articles

Back to top button
Close