স্থানীয়দের কাজের দাবীতে জুলুমবাজির অভিযোগ, সিলিন্ডার প্রস্তুতকারক কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার নোটিশ কর্তৃপক্ষের

জয়দেব লাহা, দুর্গাপুর, ৫ জুন: স্থানীয়দের কাজের দাবীতে জুলুমবাজির অভিযোগ। এমনকি কারখানার ভেতরে দিনরাত থেকে বহিরাগত ঠেকাতে কড়া নজরদারিরও অভিযোগ উঠছে কয়েকজন এলাকার কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
শেষ পর্যন্ত অতিষ্ট হয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানা বন্ধ করে দিল মালিকপক্ষ। চরম লোকসানের পাশাপাশি রাজ্যে গ্যাস সিলিন্ডার সঙ্কটের আশঙ্কা দেখছে সংস্থাটি। ঘটনাটি ঘটছে দুর্গাপুরের করঙ্গপাড়া রোডের ওপর একটি বেসরকারী ইস্পাত কারখানায়।
জানা গেছে, বেসরকারী ওই ইস্পাত কারখানায় মুলত গ্যাস সিলিন্ডার তৈরী হয়। মাস চারেক আগে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তির পর গ্যাস সিলিন্ডার উৎপাদনের পরীক্ষামুলক কাজ শুরু করে ওই বেসরকারী কারখানা। সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, বছরে দেড় লক্ষ সিলিন্ডার তৈরী করার চুক্তি রয়েছে। এছাড়াও সিলিন্ডার রিপিয়ারিং করার চুক্তি রয়েছে।
সম্প্রতি লকডাউনের পর আনলকের প্রথম পর্যায় চলছে। স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। শিল্পাঞ্চলের বন্ধ থাকা কারখানাও খুলছে সরকারি নিয়ম মেনে। এরকম সময় কারখানা বন্ধের নোটিশের স্বাভাবিকভাবে আলোড়ন পড়েছে শ্রমিকমহলে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কারখানায় বহিরাগত শ্রমিক কাজে নেওয়া হচ্ছে। তাদের দাবী স্থানীয়দের কাজে নিতে হবে। ওই দাবীতে গত কয়েকদিন ধরে কারখানার ভেতর কয়েকজন রীতিমতো পাহারা শুরু করেছে। স্থানীয়দের জুলুমবাজিতে আতঙ্কিত কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানার ডিরেক্টর নবনীত আগরওয়াল জানান,” শ্রমিক নিয়োগের দাবী পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই অনির্দিষ্ট কালের জন্য উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশাসনকে জানিয়েছি। কারখানার গেটের বাইরে একটি বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দিয়েছি।” অন্যদিকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ শুধু আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা যেমন দেখছে। তেমনই চুক্তিভঙ্গকারী হিসেবে কালো তালিকায় প্রতিপন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। আবার গ্যাস সংস্থাগুলিতে সিলিন্ডার সঙ্কট দেখা দিতে পারে।
সিটু নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন,” শোনা যাচ্ছে রাজ্যের শাসক দলের ট্রেড ইউনিয়ন এর প্রশ্রয়ে নাকি এই কারখানায় বিক্ষোভ হয়েছে এবং আরও কিছু।লকডাউনের চতুর্থ পর্যায়ের পর দুর্গাপুরের শিল্পগুলি খুলবে বলে ধাপে ধাপে প্রস্তুত হচ্ছিল। এই শিল্পে ওদের ভূমিকা দুর্গাপুরকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে পারে। দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহন করতে হবে।”
যদিও এই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনওরকম কথা বলতে রাজি হননি আইএনটিটিইউসি র পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। দুর্গাপুর মহকুমাশাসক অনির্বান কোলে জানান,” কারখানা কর্তৃপক্ষ কোন যোগাযোগ করেনি। যোগযোগ করলে অবশ্যই বিষয়টি সমাধান করা হবে।”