ফ্রান্সে মুসলিম নেতাদের ১৫ দিনের ‘আলটিমেটাম’ মাক্রোঁর

নিজস্ব প্রতিনিধি, প্যারিস: ফ্রান্সে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করতে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি দেশের মুসলিম নেতাদের চরমপন্থাকে শক্তহাতে দমন করার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধকে ধারণ করতে বলেছেন। এ জন্য তিনি মুসলিম নেতাদের ১৫ দিনের সময়ও বেঁধে দিয়েছেন। ফ্রেঞ্চ কাউন্সিল অব দ্যা মুসলিম ফেইথের (সিএফসিএম) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বুধবার এ আল্টিমেটাম দেন তিনি।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে সিএফসিএমের ৮ মুসলিম নেতা ও স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিনকে পাশে নিয়ে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ইসলাম একটি ধর্ম, এটি কোন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম না। তাই, ইসলামের নামে এখানে বাইরের কোনও দেশের স্বার্থ চরিতার্থ করা যাবে না।’ সূত্রের খবর, ফরাসি প্রেসিডেন্টের এই নির্দেশনা মেনে দেশের ইমামদের নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএফসিএম নেতারা। ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইমাম’ নামে যে কমিটি দেশের ইমামদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার এবং তাদের অনুমতিপত্র বাতিল করতে পারবে। তাই নয়, ফরাসি সরকারের এই নির্দেশনার বিষয়ে মুসল্লিদেরও সতর্ক করতে জোরদার প্রচেষ্টা চালাবে জাতীয় ইমামদের কমিটি বা ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইমাম’।
আরও পড়ুন- চতুর্থ বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজছেন পাক যুবক, সাহায্য করছেন তিন স্ত্রী
উল্লেখ্য, গত এক মাসের মধ্যে ফ্রান্সে তিনটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে, বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদের ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এবং খুন হন অভিযুক্ত ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি। এই হত্যাকাণ্ডের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেন যে, ‘স্যামুয়েল পাটি নামের ওই শিক্ষককে খুন করার কারণ ইসলামপন্থীরা আমাদের ভবিষ্যত কেড়ে নিতে চায়, কিন্তু ফ্রান্স কার্টুন ছাপানো বন্ধ করবে না। ধর্ম হিসেবে ইসলাম আজ বিশ্বজুড়ে সংকটে রয়েছে।’ এ ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভের ঝড় ওঠে। ফ্রান্সের মুসলিমরা অভিযোগ তোলেন, ইসলামকে দমন করা ও ইসলামফোবিয়াকে বৈধতা দিতে চেষ্টা করছেন ম্যাক্রোঁ। তুরস্কে অবস্থানরত ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়। ঘটনার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে ‘মানসিক রোগী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ম্যাক্রোর চিকিৎসা প্রয়োজন।’ একইসঙ্গে, মুসলিম বিশ্বেই ফরাসি পণ্য বয়কটের হিড়িক পড়ে যায়। তাই, পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিজ দেশের মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণ করতে ‘জরুরী’ পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।