৩ বছরের শিশুর গলা থেকে অস্ত্রোপচারে পেন্সিল ব্যাটারি বের করে নজির মালদা মেডিকেল কলেজের

মিল্টন পাল, মালদা: তিন বছরের ছেলে খেলার ছলে পেন্সিল ব্যাটারি গিলে নেয়। আর সেই ব্যাটারি মিনি ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে ওই শিশুর পেট থেকে বার করা হয়। চিকিৎসা পরিষেবার সাফল্যের নজির গড়লো মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই চিকিৎসা ব্যবস্থার পর ছেলেকে সুস্থ পেয়ে খুশি পরিবারের লোকেরা।
মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছর বয়সী অসুস্থ ওই শিশুর নাম অনিক সরকার। তার বাবা সঞ্জিত সরকার, পেশায় হাই স্কুল শিক্ষক। মা মৌমিতা সরকার গৃহবধূ । তাদের বাড়ি হবিবপুর থানার কেন্দুয়া এলাকায়। সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির লোকেদের অলক্ষ্যে খেলার ছলে টিভির রিমোটের একটি পেন্সিল ব্যাটারি গিলে ফেলে ওই তিন বছরের শিশু অনিক। এরপরই তার কান্নাকাটি শুনে পরিবারের লোকেরা বিষয়টি জানতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার জন্য ওই শিশুকে তার পরিবারের লোকেরা নিয়ে আসেন মালদা মেডিকেল কলেজে। বারবার ঢোক গেলার কারণেই সেই ব্যাটারিটি ওই শিশুর অ্যান্টি স্টোমাকে চলে যায়। তড়িঘড়ি মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডক্টর পার্থপ্রতিম মন্ডলের নেতৃত্বে একটি টিম তৈরি করা হয়। এরপরই শুরু হয় ওই শিশুর চিকিৎসা । প্রায় ৪০ মিনিট ধরে অস্ত্রোপচারের পর ওই শিশুর পেট থেকে উদ্ধার হয় পেন্সিল ব্যাটারিটি। বর্তমানে তিন বছরের শিশু মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক রয়েছে। তার শারীরিক সুস্থতার কথা জানিয়েছে মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা।
শিশুর বাবা সঞ্জিত সরকার বলেন, আমরা পাশের ঘরের ছেলে রিমোট নিয়ে খেলা করছিল। সেই সময় সকলের অজান্তে পেন্সিল ব্যাটারিটি গিলে ফেলে অনিক। ছেলের কান্নাকাটি শুনে আমরা ছুটে যায়। এরপর বিষয়টি জানতে পারি। তড়িঘড়ি তাকে মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসি। মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা যেভাবে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে ছেলেকে বাঁচিয়ে তুলেছে, তাতে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছে। মেডিকেল কলেজে অনেক উন্নত চিকিৎসার পরিসেবা রয়েছে।
মালদা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডা: পার্থপ্রতিম মন্ডল জানান, শিশুটির অ্যান্টি স্টোমাকে ব্যাটারিটি আটকে ছিলো। মিনি ল্যাপ্রোস্কপি করে ওই ব্যাটারিটি বার করা হয়েছে। তিন বছরের এই শিশুটি এখন সুস্থ রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে মেডিক্যাল কলেজে।
মালদা মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডা: অমিত দাঁ জানান, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে রোগীদের উন্নতমানের চিকিৎসা পরিসেবা দেওয়ার জন্য আধুনিক সরঞ্জাম এখানে রয়েছে। এদিন শিশুটির সুষ্ঠু ভাবে অস্ত্রোপচার করে ব্যাটারিটি তার পেট থেকে বার করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। শিশুটি এখন সুস্থ এবং ভালো রয়েছে।কয়েক দিনের মধ্যে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।