পশ্চিমবঙ্গহেডলাইন
রাঙাই শুধু নয়, হরেক রঙের জবায় ভাসল বর্ধমানের কালীপুজো

জয়দেব লাহা, দুর্গাপুর: মায়ের গায়ে রাঙা জবা’ই সনাতন প্রথা। তবে বেগুনী, হলুদ, গোলাপী, নীল, মিক্স জবার ভিড়ে বর্ধমানে এবার অনন্তকালের সেই ধারনায় কিঞ্চিত বদল এসেছে। হরেক রঙের জবা উৎসর্গ দেখা গেছে কালীপুজোর দিন প্রাচীন এই জেলাশহরের বেশ কিছু জায়গায়।
” মায়ের পুজোয় শুধুমাত্র রাঙাজবাই চলবে এমনটা নয়। শাস্ত্রমতে কেবল সাদা জবা বাদে যেকোন রঙের জবাই ব্যাবহার হতে পারে।” মত শহরের কালীবাজার এলাকার বীরহাটা কালীবাড়ীর প্রধান পুরোহিত দেবাশীষ মুখার্জীর। তিনি বলেন,” এই বিধান বর্নিত রয়েছে। শ্যামাচরন কবিরত্ন বিদ্যাবারিধীর প্রথমখন্ডের ‘কোন দেবতার কোন ফুল’ অধ্যায়ে।”
এখন প্রশ্ন, আচমকা এত রঙ-বেরঙের জবার জেগান মিলছেই বা কোথা থেকে? বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন শষ্য ও বীজ গবেষনা ফার্মে তৈরী হয়েছে ১৫০ ধরনের জবা। গত দুবছর আগে এইসব জবার চারা এসেছিল আমেরিকার হাওয়াই দ্বীপ, অস্ট্রেলিয়া, ভারতের পুণা, হায়দ্রাবাদ, বেঙ্গালুরু থেকে। তারপরই শুরু হয় কলা ও কোষ সংযোজন ও জীববৈচিত্রের গবেষনা।
ফার্মের অধিকর্তা ডঃ জয়প্রকাশ কেশরী বলেন,” জবা আদতে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ফুল। সাতরকমের জবা ওখানে এমনিতেই মেলে। বিভিন্ন দেশ ও রাজ্য থেকে জোগাড় করা জবা চারা নিয়ে আমরা দু-বছর ধরে গবেষনার মধ্যে প্রায় ১০০০ চারা আমরা বিলিও করেছি।”
ডঃ কেশরীর দাবি, ” আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জবার মতো আম রয়েছে প্রায় ৭০ রকমের। যার মধ্যে কেহিতুরের মত আম গাছ রয়েছে। গোলাপ রয়েছে ৮০ রকমের। ধান রয়েছে প্রায় ১০০ রকমের। তারমধ্যে ১০ রকমের গন্ধযুক্ত ধান। ৫-৬ রকমের কলা আছে। মুলত বিরল গাছ জোগাড় করে রাখা হয়।
ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকদের এসব চাষে আগ্রহ বাড়ানো ও উৎসাহিত করা। কৃষি খামারে জৈব সার দিয়ে চাষ হয়। এছাড়াও আরও অন্যান্য গাছ ও চারা নিয়ে গবেষনায় আমাদের এই ফার্ম সারা বছরই কাজ করে যাচ্ছে নিরলস।”